রাম বসাক,শাহজাদপুর ( সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের চিলগাছা গ্রামের আমজাদ হোসেন মেয়ে জাকিয়া সপ্না। তখন মাত্র ৪ বছর বয়স জাকিয়ার। ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে পিতামাতাকে আবেগাপ্লুত করার বয়স তার। ছোট্ট ছোট্ট পায়ে এ-বাড়ি থেকে ও-বাড়িতে দৌড়ে বেড়ানোর বয়স মাত্র। ঠিক তখনই পিতামাতার চোখে দুঃস্বপ্নের মত স্পষ্ট হতে থাকেন জাকিয়া স্বপ্না। আস্তে আস্তে যত বড় হন জাকিয়া, ততটাই স্পষ্ট হয় তার প্রতিবন্ধী রূপ। এমন শারিরীক সমস্যা নিয়েই বেচে থাকার তাগিদে শুরু হয় সত্যিকারের জীবন যুদ্ধ । জীবিকার তাগিদেই জাকিয়া গত আট বছর পূর্বে একটা মুদি দোকান করেন। বাড়িতে করা সেই মুদি দোকানের আয় আর প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ডের সাথে বাবা- মায়ের বয়স্ক ভাতা কার্ড থেকে যা পান তাই দিয়েই কোন ভাবে টেনেটুনে চলে তাদের সংসার। পরিবারে অন্য দুই ভাই থাকলেও বৃদ্ধ বাবা-মা এবং প্রতিবন্ধী জাকিয়ার খোঁজ নেয়না কেউ। ফলে বৃদ্ধ পিতামাতাসহ নিজের ভাত কপড়ের জন্য একাই লড়তে হচ্ছে প্রতিবন্ধী জাকিয়া স্বপ্নার।
জীবন যুদ্ধে ক্লান্ত অসহায় এই প্রতিবন্ধী জাকিয়া সপ্নার জন্য একটা ঘর ও হুইলচেয়ারের সহায়তা চেয়ে মানবতা ও পরিবেশ কর্মী মামুন বিশ্বাস তার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট দেন । মূলত সেই পোস্ট দেখেই সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের এমপি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার(১ মার্চ) সকালে সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের এমপি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতার বাসভবনে প্রতিবন্ধী জাকিয়া সপ্নার হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা তুলে। একই সাথে মানবতা ও পরিবেশ কর্মী মামুন বিশ্বাসের ফেসবুক বন্ধুদের থেকে সংগ্রহীত ৩৯ হাজার টাকা ও একটি হুইলচেয়ার তুলে দেন। এ সময় জাকিয়া সপ্নার বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে তাদের শারীরিক সার্বিক খোঁজ খবর নেন এমপি প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা।
এ সময় প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা এমপি জানান, 'আমি সব সময় চেষ্টা করি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। রাজনীতি মানবসেবার একটি অংশ, সে হিসেবে যে কোন মানুষের বিপদের সময় তার পাশে দাঁড়ানো আমার নৈতিক দ্বায়িত্ব।
মানবতা ও পরিবেশ কর্মী মামুন বিশ্বাস বলেন, 'আমি সব সময় অসহায় মানুষের পাশে ভালো কিছু নিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ফেসবুকের মাধ্যমে অসহায় মানুষ ও বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নিয়মিত। একটা অসহায় পরিবারকে যখন স্বাবলম্বী করতে পারি, তাদের মুখে হাসি ফুটাতে পারি তখনই ভিতর থেকে তৃপ্তি অনুভব করি। দেশে অনেক অসহায় মানুষ আছে। আমরা সবাই যদি নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী তাদের পাশে দাঁড়াই তবে আশাহত মানুষগুলো অন্তত ভালোভাবে বাচাঁর স্বপ্ন দেখবে।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।