সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের একই পরিবারের চারজনকে হত্যার দায়ে একমাত্র আসামী রায়হানুলকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান। এক জনাকীর্ন আদালতে এই রায় ঘোষনা করেন।
পিনপতন নীরবতার মধ্যে আদালত চত্ত্বর জুড়ে এসময় ছিল কৌতুহলী মানুষের ভিড়। কাঠগড়ায় হাজির করানো হয় নিহত গৃহকর্তা শাহীনুর ইসলামের ভাই একমাত্র চার্জশীটভূক্ত আসামী রায়হানুলকে। মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর গভীর রাতে কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে একই পরিবারের চার জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয় ।
এই হত্যার নির্মম শিকার হন গৃহকর্তা মোঃ শাহীনুর রহমান(৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন(৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী(১০) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানা(৮)। ঘাতকরা শাহীনুর ইসলামের চার মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশু মারিয়া সুলতানাকে অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থলে রেখে যায়। তদন্ত শেষে সিআইডি পুলিশ জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে নিহতদের প্রথমে ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাওয়ানো হয়। গভীর রাতে ঘুমের মধ্যে তারা অচেতন হয়ে পড়লে ওই পরিবারের সদস্য রায়হানুল ইসলাম তার বড় ভাই, ভাবী ও তাদের দুই সন্তানের পা বেঁধে রেখে ধারালো কোপা দিয়ে জবাই করে হত্যা করে।
সিআইডি পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো কোপাটি নিকটস্থ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে। ঘটনার পরদিন ১৫ অক্টোবর সকালে নিহত শাহীনুরের ভাই রায়হানুলকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কলারোয়া থানায় নিহত সাবিনার মা ওফাপুর গ্রামের ময়না খাতুন কলারোয়া থানায়এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। সিআইডির সাতক্ষীরা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, আটক রায়হানুল একাই ৪ জনকে জবাই করে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
আদালতে ১৬৪ ধারায়ও একাই হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন তিনি। এই মামলায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে চার্জশীট দেওয়া হয় একমাত্র আসামী রায়হানুলের বিরুদ্ধে। মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে। একজন সাফাই স্বাক্ষীও দিয়েছেন। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষনা করার দিন ধার্য্য করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন পিপি এ্যাড. আব্দুল লতিফ।
তিনি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। অপরদিকে আসামীপক্ষে ছিলেন এ্যাড. এসএম হায়দর। তিনি বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। উচ্চ আদালতে আপিল করবো। এদিকে রায় ঘোষনার পর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রায়হানুল চিৎকার করে বলতে থাকেন, আমি নির্দোষ, আমি ন্যায়বিচার পাইনি।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।