শাহাদাত হোসেন,কালিগঞ্জ সাতক্ষীরাঃব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমী। হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। দুই বাংলার উভয় পারে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে ইছামতি, কালিন্দী ও কাকশিয়ালীর তৃমোহনায় বিসর্জন দেওয়া হয়েছে প্রতিমা। তবে ভারত পারের কোনো নৌযান নদীতে নামেনি।
সরেজমিনে দেখাগেছে, বুধবার (৫ (অক্টোবর) বিকাল ৪ টা থেকে বসন্তপুর রিভার ড্রাইভ ইকো পার্ক এলাকায় দর্শনার্থী আসতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে হাজার হাজার নারী পুরুষের সমাগম ঘটে। নদীতে প্রতিমাবাহী ট্রলার (১টি) সহ ১৫/১৬ টি নৌযান তৃমোহনায় নামে। গোধূলিলগ্নে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম, কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান (আমিন), থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ হালিমুর রহমান বাবু, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ সাইফুল বারী সফু, সহ সভাপতি শেখ আনোয়ার হোসেন, সহ সভাপতি বাবলা আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক এম হাফিজুর রহমান শিমুল, তথ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এসএম আহম্মাদ উল্লাহ বাচ্ছু প্রমুখ।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম ও কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ হালিমুর রহমান জানান, এবার উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে মোট ৫২টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে নিরাপত্তার সাথে উদযাপন করার জন্য পুলিশ ও প্রশাসন নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরা। সবমিলে কালিগঞ্জ থানা এলাকায় কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে। ভারতের হেঙ্গলগঞ্জ অংশে কোনো প্রতিমা বুধবারে বিসর্জন হয়নি তবে দর্শনার্থীরা ছিল। কালিগঞ্জ পূজা উদযাপন কমিটির সেক্রেটারী মিলন কুমার ঘোষ জানান, বিসর্জনের দিনে উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে বুধবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯ টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমীর বিহিত পূজা এবং পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জন। বেলা ১২ টায় আয়োজন ছিল স্বেচ্ছায় রক্তদান। বিকেল ৪টায় বিজয়া শোভাযাত্রা। বিজয়া দশমীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অন্যরকম আবেগ ও মন খারাপ করা এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। কারণ, দশমী মানেই দুর্গা মায়ের ফিরে যাওয়া। অপেক্ষায় থাকতে হবে একটি বছর। সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী জানা যায়, এবার দেবীদুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছিলেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড় বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে স্বর্গে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। যার ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।