ডেস্ক রিপোর্ট: রোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাত দিনের জন্য কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সেই অনুযায়ী সোমবার (৫ এপ্রিল) প্রথম দিন ঢাকাতে গণ পরিবহন চলতে দেখা যায়নি। তবে ব্যক্তিগত যানবাহন, রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করেছে।
সরেজমিনে রাজধানীতে মার্কেট, শপিংমল, প্রধান সড়কের পাশের দোকান ও ফুটপাত বন্ধ ছিলো। তবে মহল্লার অলিগলির মধ্যে দোকান, ফুটপাত যথারীতি খোলা ছিল। ঢাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে কয়েকঘণ্টা সময় লাগলে আজ একেবারেই কম সময়ে যাওয়া সম্ভব হয়। রাস্তায় ‘স্টাফ বাস’ লিফলেট লাগানো বাসগুলো সড়কে দেখা গেছে। কিছু সংখ্যক ট্রাক বা মিনি ট্রাকও চলাচল করছে। তবে গণপরিবহন দেখা যায়নি।
পল্টন থেকে উত্তরা পর্যন্ত রামপুরা-বাড্ডা রাস্তায় বিপুল সংখ্যক প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, রিকশা চলাচল করছে। রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের কর্মব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো ছিল। ধানমন্ডি এলাকার গলির ভেতরের দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাথারীতি খোলা ছিল। মহল্লার চায়ের দোকানগুলোয় ভিড় দেখা যায়। সেখানে মানুষজনের মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার প্রবণতা কম দেখা গেছে। অনেকে মুখে মাস্কও ছিল না।
এদিকে সীমিত পরিসরে সরকারি অফিস-আদালতের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় কেউ কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ বা রিকশায় কর্মস্থলে যাচ্ছেন। বাস বন্ধ থাকায় তাদের সমস্যা বেড়েছে। নিধিনিষেধ মেনে অধিকাংশ শপিং মল বন্ধ রাখা হলেও লকডাউন প্রত্যাহারের দাবিতে নিউ মার্কেট এলাকায় দ্বিতীয় দিনের মত বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
কাকরাইলের মোড়ে একজন ট্রাফিক কনস্টেবল জানালেন, রিকশা ও প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেশি। সেজন্য হঠাৎ হঠাৎ জট লাগে রিকশায়।
অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঢিলেঢালা ভাবে লকডাউন চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চট্টগ্রাম: বন্দর নগরী চট্টগ্রামে লকডাউনে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। তবে জরুরি প্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হয়েছেন ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। শপিংমল বা মার্কেট বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে বিভিন্ন শিল্পকারখানা, ব্যাংক, ওষুধের দোকানসহ কাঁচাবাজার। লকডাউন কার্যকরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে তৎপর রয়েছে।
বরিশাল: রবিশালের বিভিন্ন এলাকায় লকডাউনের তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ। লকডাউন কার্যকরে তৎপর রয়েছে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রাজশাহী: শিক্ষানগরী রাজশাহীতে লকডাউনের প্রথম দিনে বাজারে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। দোকান-পাট, কাঁচাবাজার খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে শপিংমলগুলো। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও অটোরিকশাগুলো গাদাগাদি করে মানুষকে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে।
রংপুর: রংপুর নগরীতে খাবারের দোকান ছাড়া মার্কেট ও শপিং কমপ্লেক্স বন্ধ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শহরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে। তবে লকডাউন মানাতে মাইকিং করছে সিটি করপোরেশন।
সিলেট: সিলেট নগরীতে সিনজি চালিত অটোরিকশা, রিকশা, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। সরকারি ঘোষণায় বন্ধ রাখা হয়েছে দোকানপাট।
খুলনা: খুলনায় লকডাউনে ছোট যানবাহনে গাদাগাদি করে লোকজন চলাচল করতে দেখা যায়। শপিংমল বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে কাঁচাবাজারগুলো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্পকারখানায় স্বাভাবিক উৎপাদন বজায় রয়েছে। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কর্মস্থলে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমিকসহ অফিসগামী লোকজন।
এছাড়া,কুমিল্লা, নরসিংদী, নাটোর, লালমনিরহাট, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জসহ সারা দেশে ঢিলেঢালাভাবে চলছে লকডাউন। দোকানপাট বন্ধ থাকলেও রাস্তায় চলাচল করছে মানুষ ও যানবাহন।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।