নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে মারধর করেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম।
মারধরের শিকার ওই নেতার নাম শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, প্রক্টরিয়াল টিম নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় শামীম আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে যায়। সেখানেও উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে আবার গণধোলাই দেন। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল নিরাপত্তা শাখায় আসে। রাত ৯টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি শামীমকে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর আহত অবস্থায় তাকে সাভার গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা ঢাকা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এলাকায় থাকেন। ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থানরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “বিকেলে খবর পেয়ে নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে ৩৯ ব্যাচের সাবেক ছাত্রকে উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। আমরা তাকে প্রক্টরের হাতে তুলে দেই। সেখানে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “গত ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে শিক্ষার্থীরা আটক করে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেন। আমরা আশুলিয়া থানায় অবহিত করলে পুলিশের একটি দল আসে। সেখান থেকে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছিল।”
আশুলিয়া থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেনও শামীমের মৃত্যুর বিষয়টি ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “তাকে সাভারের গনস্বাস্থ্য হাসপাতালে আনা হয়। পরে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।”
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ এবং এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার ও শাস্তির দাবি জানান।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।