ডেস্ক রিপোর্টঃ তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধে করা রিট আবেদনে ঠিকানা ভুল থাকায় তা সংশোধন করে আবেদন করতে বলেছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধে জারি করা রুল শুনানির আবেদন করেছিলেন রিটকারী আইনজীবী।
আবেদনের শুনানির শুরুতে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করার বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতের অফিসার। এখানে পুলিশ কেন? আদালতের সামনে পুলিশ আনা দুঃখজনক। আমি এখানে ৪৫ বছর আইন পেশায়। এ অবস্থা কখনো দেখিনি।’ এ সময় আদালত জানতে চান তিনি কার পক্ষে কীভাবে শুনানি করছেন? জবাবে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি একজন কোর্ট অফিসার হিসেবে বলছি।’ এরপর তিনি বলেন, নোটিশ দেওয়া ছাড়া একজনের বিষয়ে আদেশ দেওয়া যায় না।
আদালতে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। তিনি পালিয়ে যাননি। এখানে রাজনৈতিক নেতা এসেছেন আরেক রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য প্রচার বন্ধে। যা বিশ্বে অস্বাভাবিক ঘটনা।
অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘তারেক রহমান পলাতক। অতি সম্প্রতি আমরা দেখছি মিটিংয়ে তাঁর ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। এটা আদালতের আদেশের লঙ্ঘন।’
আইনজীবী সাইদ আহমেদ রাজা বলেন, ‘জারিকারকের রিপোর্ট সামনে আছে। আদালতই এটা সংশোধন করে নিতে পারেন।’ তখন আদালত বলেন, ‘আমরা তাৎক্ষণিক সংশোধন করে নেই, যখন দুই পক্ষই উপস্থিত থাকে। এখানে আইনের দৃষ্টিতে একপক্ষ অনুপস্থিত। তাই আপনারা সংশোধন করে নিয়ে আসেন।’
এর আগে ৮ আগস্ট এ মামলার শুনানিতে আদালতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। আজও শুনানির সময় কয়েক শ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আর এজলাসের বাইরে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। তবে সাধারণত এজলাসের বাইরে এত পুলিশ কখনো উপস্থিত থাকে না।
আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কোনো ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়েছিল।
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি ওই রুল জারি হলেও তা নিষ্পত্তি হয়নি দীর্ঘ সময়ে। সম্প্রতি তারেক রহমানের বক্তব্য বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারকে কেন্দ্র করে বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসে। তাই ওই রুল শুনানি করতে আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী।
এদিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে উচ্চ আদালতে আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে হত্যার ষড়যন্ত্রের জন্য পাঠানো হচ্ছে না। অথচ ক্যাসিনো সম্রাট, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, হাজি সেলিমকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়। ওবায়দুল কাদের নিজেও চিকিৎসার জন্য বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন। এটা আইন ও সংবিধানের লঙ্ঘন। আর সবকিছুই হচ্ছে এক ব্যক্তির নির্দেশে।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া হাইকোর্টের আদেশে জামিন পাননি। নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়েছেন। তাই ওনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্বাহী বিভাগের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করে। আদালতের নির্দেশ জামিন পেলে এখানে আবেদন করা যেত।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।