স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানা এলাকায় প্রতারণা করতে গিয়ে প্রতারক চক্রের প্রধানসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ এর সদস্যরা। ২৪ শে আগস্ট শনিবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের সদস্যরা বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার উকিলপুর থানার মাসতীবাড়ী দীঘর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে বিজিবির চাকুরীচ্যুত সৈনিক জয়নাল আবেদীন (২৭), গাজীপুর জেলার সদর থানার জান্দালিয়া গ্রামের মৃত, মুসলেম উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হোসেন (২৯) এবংকিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানা চরজাকারিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান(২৯)। র্যাবের অভিযানকালে আসামীদের কাছ থেকে র্যাবের ইউনিফরম পরিহিত ছবি এডিটিং করা ২টি, বাংলাদেশ র্যাব লেখা ও র্যাবের মনোগ্রাম সম্বলিত জ্যাকেট ১টি, র্যাব সদর দপ্তরের সীল ও অফিসারদের ভুয়া স্বাক্ষর সম্বলিত নোটিশ ৭ টি, র্যাবের গোয়েন্দা অফিসার, ডিউটি অফিসার ও তদন্তকারী অফিসার নামীয় সীল ৪ টি, বিজিবি’র আইডি কার্ড ১ টি, বিজিবি ইউনিফরম ১ সেট, ল্যাপটপ ১ টি, প্রিন্টার মেশিন ১ টি, মোবাইল ফোন ১ টি ও সীম ১৪ টি জব্দ করা হয়। উক্ত ভুয়া র্যাব প্রতারক চক্রের দ্বারা প্রতারিত ভুক্তভোগী একজন আদমজী অবস্থিত র্যাব-১১ কে বিষয়টি জানালে র্যাব বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে মাঠে। তদন্তে বের হয়ে আসে প্রতারক চক্রদের সবকিছু। প্রতারক চক্রটি র্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদের সীলমোহর ব্যবহার করে নিজেদের তৈরীকৃত ১ টি ভুয়া নোটিশের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষকে অপরাধী আখ্যা দিয়ে নোটিশটি প্রেরণ করে। নোটিশনামায় প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে উৎকোচ প্রদানপূর্বক উক্ত অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে এমন আশ্বাস দেয়। অন্যথায় গ্রেফতার করার ভয় দেখায়। এ প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে উৎকোচ গ্রহন করার সময় উৎপেতে থাকা র্যাব সদস্যরা তাদের হাতে-নাতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্তমান ঠিকানা গাজীপুর জয়দেবপুর বলে জানান। র্যাব-১১ এর অধিনায়ক বলেন, উল্লেখিত প্রতারক চক্রের প্রধান আসামী মোঃ জয়নাল আবেদীন ইতিপূর্বে বিজিবিতে চাকুরী করতো। বিজিবিতে চাকুরীরত অবস্থায় সে ২০১৭ সালে বিজিবি থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে একটি প্রতারক চক্র সংগঠিত হয়। সে দীর্ঘদিন ধরে বিজিবিতে চাকুরী দেওয়ার নাম করে অনেক মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তারই নেতৃত্বে উক্ত প্রতারক চক্র ২ বছর যাবৎ ধরে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আর্থিকভাবে সম্পদশালীদেরকে র্যাবের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে দেওয়াসহ মিথ্যা মামলার ভয়-ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। র্যাবের অধিনায়ক আরও বলেন, প্রতারক চক্রটি র্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদবীর নামীয় সীল তৈরী করে তাদের প্রস্তুত করে বিভিন্ন ভুয়া নোটিশে নিজেরাই স্বাক্ষর করে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। এক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার জন্য ভুয়া নোটিশগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পৌছানো হতো। প্রতারক চক্ররা কখনো নিজেদের র্যাবের এসআই এবং কখনো ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয় দিয়ে সাধারন মানুষ, প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে প্রতারনা করতো। উক্ত প্রতারক চক্রের ৫ জনের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকি ২ জনকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।