নিক্সন চৌধুর প্রিয়জন জাহিদ শিকদারের দুই হাজার অনুসারীসহ তার পক্ষের গ্রামবাসী ও মুরব্বিদের নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী শহীদুল ইসলাম বাবুল খানের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগদান করেছেন।
ডেস্ক রিপোর্টঃ যোগদান অনুষ্ঠানের মধ্যমনি ছিলেন ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী গণমানুষের নেতা শহিদুল ইসলাম খাঁন বাবুল, বিশেষ অতিথি ছিলেন ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপি সভাপতি শিল্পপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মোল্লা, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী কাওসার, ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপিসহ সকল অঙ্গসংগঠনের সকল নেতাকর্মী। গতকাল শনিবার জাহিদ শিকদারের বাড়ীতে গিয়ে তার সাথে কথা বললে তিনি নিক্সন চৌধুরীর আর্দশ ছেড়ে আজীবনের জন্য বিএনপিতে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জাহিদ শিকদার এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন ভাইরাল ম্যান। কথিত আছে জাহিদ শিকদারকে নেতাদের প্রয়োজনে বুকের মধ্যে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত তার উপকারে তেমন কেউ আসেনি। তিনি সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরীর প্রতি কষ্ট-দুঃখে-ক্ষোভে শেষ পর্যন্ত জাহিদ শিকদারের রাজনীতির হাতেখড়ির দল বিএনপিতে যোগদান দিলেন। তার এলাকাজুড়ে এখন জয়জয়কার।
জানা গেছে, জাহিদ বিগত ৩০ বছর রাজনৈতিক নেতাদের সাথে মিসছেন গ্রামের লোকদের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে, তবে তিনি বিএনপি রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেননি কোনো দলে। এইবার প্রথম প্রকাশ্যে যোগ দিলেন বিএনপিতে। তার ফিরে আসায় চুমুরদী ইউনিয়নের বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে আনন্দ উচ্ছ্বাস।
কথিত আছে, জাহিদ শিকদার যে দিকে যায়, মোল্লা মৌলবি তৌহিদ জনতা সেদিকে ঝুঁকে। চুমুরদি ইউনিয়নের সকল মাদরাসা ও মসজিদ ইমামদের সাথে জাহিদ শিকদারের রয়েছে সুসম্পর্ক।
চুমুরদি এলাকার দোকানদার বলেন, আমাদের দেখামতে বিগত ৩০ বছর নিজ চোখে দেখেছি এই জাহিদ শিকদারের বাড়িতে প্রতি বছর ইফতার পার্টিসহ প্রায়ই আনুষ্ঠানিকভাবে ৩ থেকে ৪ হাজার লোকের বিলাসী ভোজের বড় বড় আয়োজন সব হয়েছে এই জাহিদ শিকদারের বাড়ী। গ্রামের অসহায় হতদরিদ্রদের সব সময়ই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। জাহিদ শিকদারের লোকই হচ্ছে গ্রামের খেটে খাওয়া অসহায় দিনমজুর ও মধ্যবিত্ত পরিবার।
শুধু রাজনীতিক নেতাই নয় ভাঙ্গা উপজেলার ঐতিহাসিক বড় বড় ওয়াজ মাহফিলে দশ হাজার লোকের মাহফিলে মুফতি আমিনী, হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা, আমির হামজা, গোয়ালন্দের আব্বাসী হুজুরদের মতো বড় বড় আলেম-ওলামা বুর্জুরগানে আলেম সবাই বিরাট ওয়াজ মাহফিল-কোরআনে তাফসির করছেন জাহিদের বাড়ীর সামনে স্কুল মাঠে। আলেম-ওলামা সহ হাজার হাজার লোক প্রাণভরে খেয়েছে জাহিদের বাড়ীতে।
সরজমিনে কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, জাহিদ শিকদার নিক্সন চৌধুরী জন্য ফকির হয়ে গেছে। নিজের স্বার্থে কিছুই করেনি। বিগত সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় জাহিদ সিকদার অন্যায় অপরাধের বিরুদ্ধে সবসময় লিখতো।
জানা যায়, সরকার পতনের পরে মিথ্যা মামলা ও পুলিশের হয়রানি মারাত্মক শিকার হয়েছেন তিনি। তার জীবনের সবচেয়ে বড় আঘাত দিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী এমনই দাবি ঐ নারীর।
চুমুরদির মোমেন মাতুব্বর বলেন, আমরা শুনছি নিক্সন চৌধুরীর কাছে ছাত্রলীগ ও শেখ হাসিনার অত্যাচারের বিপক্ষে লেখার কারণে প্রকাশ্যে অপমান-অসম্মান ও পরবর্তী সময় পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মানবিক নেতা জাহিদ শিকদার। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২৪ জুলাইয়ের রাতটি ছিল ‘জীবনের সবচেয়ে অপমানজনক রাত’।
‘শত মানুষের সামনে অপমান করেন নিক্সন চৌধুরী’-দাবি জাহিদ শিকদারের। এটা তার জীবনের কষ্টের কালোরাত।
জাহিদ শিকদার অভিযোগ করে বলেন, সেদিন তিনি তার সন্তানের সুন্নতে খাৎনার দাওয়াত দিতে নিক্সন চৌধুরীর বাসায় গেলে উপস্থিত শতাধিক মানুষের সামনে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে চৌধুরী। তার দাবি-নিক্সন চৌধুরী তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেন, ফেসবুক পোস্ট দেখার নামে ব্যক্তিগত তথ্য তল্লাশি করেন, এমনকি হাতে থাকা দাওয়াত কার্ডটিও সামনেই ছুড়ে ফেলে দেন। জাহিদের ভাষ্য, তিনি সামাজিক মাধ্যমে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে লেখা এবং সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক পোস্ট করায় নিক্সন চৌধুরী রেগে যান।
জাহিদের বক্তব্য, আমি তখন অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লিখতাম। সেই পোস্টগুলোর স্ক্রিনসট এখনো আমার কাছে আছে। জাহিদ শিকদার আরো অভিযোগ করেন, নিক্সনের বাসা থেকে বের হতেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেনের নির্দেশে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। তৎকালীন ওসি এবং সেকেন্ড অফিসার তাকে সেদিন রাতভর থানায় আটকে রাখেন বলেও দাবি করেন তিনি। ঐ দিনের ‘রাতটা ছিল খুব কষ্টের। পরদিন বিকেলে থানা থেকে ছাড়া পান-বলেছেন জাহিদ।
বিএনপিতে যোগদানের বিষয়ে জাহিদ শিকদার বলেন, রাজনৈতিকভাবে আমার ওপরে কোনো চাপ ছিল না। আমার বাবা একদিন স্কুলশিক্ষক তিনি সারা জীবন বিএনপি করে গেছেন আমার পরিবার বিএনপির পরিবার, আমার মনে প্রাণে বিএনপির প্রতি ভালোবাসাই আমাকে বিএনপিতে ফিরেছি এবং আমি বিশ্বাস ও আদর্শের জায়গা থেকে বিএনপিতে যোগদান করেছি। তিনি আরো বলেন, বিগত ৩০ বছর গ্রামবাসীর মধ্যে নিজেকে খুঁজেছি এই মাটি আমার মা।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।