ফেনী জেলা প্রতিনিধি
ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহুমুখী দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মানাধীন আশ্রয় কেন্দ্রের নির্মাণ কাজে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ বন্ধ করে দিলো স্থানীয় জনতা। কাজটির শুরু থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে নি¤œমানের কাজ করায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মঙ্গলবার বিকেলে পাঁচগাছিয়া স্কুল মাঠে এসে নির্মাণ কাজটি বন্ধ করে দেয়। সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ^ ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বহুমুখী দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালে পাঁচগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহুমুখী দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মার্ণ কাজটি পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দি বিল্ডারস ইঞ্জিনিয়ারর্স এসোসিয়েট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে। বর্তমানে প্রায় প্রকল্পটির কাজ শেষের পথে। কাজ পাওয়ার পর থেকেই নিম্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রটির কাজ করায় এলাকার স্থানীয় লোকজনের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করে। তারা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারসহ জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্যদের জানিয়ে প্রতিকার দাবী করেন। ঘটনার দিন বহুমুখী দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মানাধীন আশ্রয়ন কেন্দ্রের রাস্তায় নিম্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ঢালাই চলাকালে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মানিকসহ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের উধ্বর্তন কর্মকর্তা, সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার আশ^াস দেন। স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারণে স্কুলের মূল ফটক ভেঙ্গে যায়। এতে স্কুলের নিরাপত্তা বিঘিœত হয়। এরই মাঝে স্কুলের মাঠ থেকে একটি মোটর সাইকেল, একটি টিউবয়েলসহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী খোয়া যায়। এছাড়াও স্কুলের মাঠটি নির্মাণ সামগ্রী রাখায় খেলাধূলার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এবিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন লোকজনকে বার বার বলেও কোন প্রতিকার না পেয়ে এক পর্যায়ে স্কুলের অর্থ ব্যয়ে মাঠটি সংস্কার করে খেলাধূলার উপযোগী করা হয়। পাঁচগাছিয়া এ জেড খান স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ফকির আহাম্মদ ফয়েজ জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারণে স্কুলের মাঠ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ বিষয়ে অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন অধ্যক্ষকে দফায় দফায় প্রতিকারের দাবী জানায়। স্থানীয় শামীম মজুমদার জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজের সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করে নিম্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। তাই বিক্ষুদ্ধরা নিম্মমানের কাজ বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মানিক নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় বিক্ষুদ্ধ লোকজন কাজ বন্ধ করে দেয়ার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষুদ্ধ লোকজনকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমান জানান, রাস্তাটির নির্মাণ কাজে সামান্য ক্রটি ও স্কুলের ফটকটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে বর্তমানে প্রকল্পটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।