ডেস্ক রিপোর্টঃ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতাকে হত্যাকারীদের শক্তির মূল উৎস ছিল জিয়াউর রহমান। এই জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালিয়েছেন- এরকম কোনো নজির নেই।
জাতির পিতার খুনি রশিদ এবং ফারুক বিবিসিতে ইন্টারভিউ দিয়ে স্বীকার করেছে, এমনকি পত্রপত্রিকাতে তারা বলেছে যে তারা যা কিছু করেছে জিয়াউর রহমান তাদের সঙ্গে সব সময় ছিল। অথচ এই জিয়াউর রহমান মেজর ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাকে মেজর থেকে পদোন্নতি দিয়ে মেজর জেনারেল করেছেন। আর সেই জিয়াই জাতির পিতার সঙ্গে বেঈমানি করেছে। তাকে হত্যার নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে খুনি জিয়া।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভায় এমন কথা বলেন শেখ হাসিনা। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণসভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এর সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান।
পচাত্তরের পর আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৬ আগস্ট পর্যন্ত ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাসায় জাতির পিতার লাশ পড়েছিল। তখনো কেউ তাকে দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেনি। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর নাম যেন ইতিহাস থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় সেজন্য সব ধরনের ষড়যন্ত্র করেছিল।
তিনি বলেন, সারাদেশে ছাত্রলীগের বহু নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বহু মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। আমি ছাত্রলীগের হাতে খাতা এবং কলম তুলে দিয়েছি। তবে তারা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, ইতিহাস থেকে তারা বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে পারেনি। আজকে বঙ্গবন্ধুর নাম সারা বিশ্ব জানে।
একাত্তরের পরাজিত শক্তি সবসময় সক্রিয় আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে পরাজিত শক্তি সবসময় সক্রিয় ছিল। তারা এখনো সক্রিয় আছে। এখনো বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্য ও দোসররা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তারা থেমে নেই।
এজন্য ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, পদে পদে বাধা আসতেই থাকবে। আমাদের পায়ে পায়ে শত্রু আছে। পদে পদে বাধা আসবে। আমাদের চলার পথ কিন্তু মসৃণ নয়। কিন্তু সব সময় সৎ পথে থাকলে সঠিক লক্ষ্য থাকলে। লক্ষ্য অর্জন হবেই।
দেশ গড়তে ছাত্রলীগকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা আধুনিক বাংলাদেশ পেয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। এই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে ছাত্রলীগকে প্রস্তুত হতে হবে। করোনাকালে ছাত্রলীগ মানুষের পাশে ছিল। মৃতদের লাশ দাফন ও সৎকার করেছে। কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। মানুষকে সচেতন করে তুলেছে। ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছে।
নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজ করেছে। একটা কথা মানে মাথায় রাখতে হবে ছাত্রলীগকে সবসময় মানুষের পাশে থাকতে হবে। সেভাবেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পথ চলতে হবে। কেননা জনগণের জন্যই আমাদের রাজনীতি। গ্রামের একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার অবহেলিত মানুষের জীবনমান উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য।
ছাত্রলীগ পরিচালনায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদান উল্লেখ করে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবার অনুপস্থিতিতে আমার মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রলীগের দেখভাল করতেন। কারাগার থেকে বাবা ছাত্রলীগকে যে নির্দেশনা দিতেন, মা নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেই নির্দেশনা পৌঁছে দিতেন।
এমনকি নিজের হাতের চুড়ি ও গহনা বিক্রি করে ছাত্রলীগের খরচ চালাতেন। জেল থেকে বাবা যে নির্দেশনা দিতেন, সে অনুযায়ী তিনি কাজ করতেন। এভাবেই তিনি ছাত্র লীগকে সংগঠিত করেছেন।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।