নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
শতাধিক মানুষকে কম্বল দেওয়ার আয়োজন। তাদের জন্য বিশাল প্যান্ডেল। মঞ্চও তৈরি করা হয় উচুঁ করে। দামী সাউন্ড সিস্টেম। রাখা হয় অতিথিদের চেয়ার, বাইরে শ্রোতাদের। প্রায় এক থেকে ২ ঘণ্টা চলে বক্তৃতা। কম্বল নিয়ে আসা লোকজনও বাধ্য হয়েই বসে থাকতে হয়। চলে রাজনৈতিক বক্তব্য। শেষে ফটোসেশন। শতাধিক কম্বল দিতে যে টাকা খরচ করা হয় তার সমান খরচ হয়ে যায় এসব আয়োজন করতে। মোটাদাগে বলা চলে, মূলত ফটোসেশন করতেই এসব আয়োজন করা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকাতে গত কয়েকদিন ধরেই জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াসউদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিট অসহায়দের মাঝে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম করছে। কয়েকদিনের আয়োজনে দেখা গেছে, মামুন মাহমুদের একাধিক আয়োজনে বেশ বড় প্যান্ডেল করা হয়েছে। একাধিক আয়োজনে পুরো মাঠ জুড়েই প্যান্ডেল করা হয়েছে।
একই ধরনের আয়োজন দেখা গেছে গিয়াসউদ্দিনের একাধিক কর্মসূচীতেও। বাদ যায়নি মহানগর বিএনপিও। তাদের কয়েকটি আয়োজনে বিশাল আয়োজন করতে দেখা যায়।
বিএনপির একাধিক নেতা জানান, সত্যিকার অর্থে অসহায়দের পাশে থাকতে চাইলে আয়োজন না করেও করা যায়। বিশেষ করে অসহায়দের বাড়ি বাড়ি গিয়েও কম্বল দেওয়া যায়। কারণ কম্বল দেওয়ার আগে তাদের একটি করে স্লিপ দেওয়া হয়। এটা দিতে অসহায়দের খোঁজ করা লাগে। তখন তাদের এ কম্বল দিলেই হয়ে যেত। কিন্তু তাদের স্লিপ দিয়ে আবার নির্ধারিত সময়ে এনে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির করা হয়। তাদের বসানো হয় আলাদা সারিতে।
এটাকে রীতিমত অসহায়দের সঙ্গে ‘তামাশা’ বলছেন অনেকে। তাদের মতে, ২০০ মানুষকে কম্বল দিতে গিয়ে এগুলো কেনা হয় সাধারণ ২ শ টাকা গড়ে। ফলে ২০০ মানুষকে কম্বল দিলে খরচ যাবে ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু যে মঞ্চ আর আয়োজন সেটা করতেও এর কাছাকাছি গিয়ে ঠেকবে।
তাই বিএনপি নেতাকর্মীদের ফটোসেশন ও নিজেদের জাহির বাদ দিয়ে প্রকৃতপক্ষে অসহায় শীতার্তদের পাশে থাকার আহবান সংশ্লিষ্টদের।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।