মোঃ শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টারঃ
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে রেল ক্রসিংয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকসহ অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও একজন ১২ বছর বয়সী শিশু নিখোঁজ রয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কালিকাপুর-বাকশীমূল রেলক্রসিংয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার বিবরণ
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার দিকে যাওয়ার সময় কালিকাপুর-বাকশীমূল রেলক্রসিংয়ে অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন, আর বাকিরা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই রেলক্রসিংটি অবৈধ এবং সেখানে কোনো সিগন্যাল ব্যবস্থা নেই।
নিহতদের পরিচয়
নিহতরা হলেন:
আলী আহমদ (মনছুর আলীর ছেলে)
সাজু মিয়া (অটোরিকশাচালক)
লুৎফা বেগম (৬৫)
শাইনুর আক্তার সানু (৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, বয়স ২৬)
সফর জান বেগম
রফিক মিয়া রফেজ (৫৫)
হোসনে আরা বেগম (৬০)
এছাড়া হোসনে আরা বেগমের ১২ বছর বয়সী নাতি সাইফুল ইসলাম শুক্কুর এখনও নিখোঁজ।
রেলক্রসিংয়ের অবস্থা
ঘটনাস্থলে গিয়ে লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি এমরান হোসেন জানান, রেলক্রসিংটি অবৈধ। সেখানে কোনো সিগন্যাল ব্যবস্থা নেই। দুর্ঘটনার পর রেল কর্মকর্তারা রেল ক্রসিংটি অবৈধ ঘোষণা করে একটি ব্যানার টাঙানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে। তারা সিগন্যালসহ যাত্রী ও যানবাহন চলাচলের নিরাপত্তার দাবি তোলেন।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
ঘটনার পরপরই বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সেনাবাহিনীর একটি দলও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।
স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্থানীয়রা দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে রেলক্রসিংটির বৈধতা ও নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত ছিল। এই দুর্ঘটনা আরও একবার রেলক্রসিংয়ের অব্যবস্থাপনার করুণ চিত্র তুলে ধরেছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রেল নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি ও অসচেতনতার প্রতি প্রশ্ন তুলেছে। সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো জরুরি।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।