ওমর ফারুক বিপ্লব: ভারতীয় নাগরিকের জমি রেজিষ্ট্রি না করায় বিপাকে পড়েছেন সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিষ্ট্রার অমায়িক বাবু। একের পর এক হয়রানি ও ষড়যন্ত্রে নাজেহাল ও করেছেন মিথ্যা অভিযোগ। সম্প্রতি অভিযোগটির তদন্ত করেন যশোর জেলা রেজিষ্ট্রার আবু তালেব। তদন্ত কালে সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন সদর সাবরেজিষ্ট্রার অমায়িক বাবু।
রেজিষ্ট্রি অফিস সূত্রে জানা যায়, এস এম জুলফিকার আলী জিন্নাহ নামের একজন ব্যক্তি দীর্ঘ দিন যাবত বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধ দলিল করার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিষ্ট্রার দলিলটি রেজিষ্ট্রি করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নী দলিলের গ্রহীতা এস. এম. জুলফিকার আলী জিন্নাহ স্বেচ্ছায় দলিলটি ফেরতও নেন। যার প্রেক্ষিতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সদর সাব-রেজিষ্ট্রার অমায়িক বাবুর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেন।সূত্র আরো জানায়, বিগত ১৬ নভেম্বর ২০২৫ অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নী দলিলের দাতা মোকসেদুর রশিদ, পিতা-মৃত মোমেনার রশিদ এর অনুপস্থিতিতে এস. এম. জুলফিকার আলী জিন্নাহ উক্ত দলিলটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য দাতার অনুপস্থিতিতে দাখিল করে।আইনে দাতার অনুপস্থিতিতে দলিল রেজিস্ট্রি করার সুযোগ নেই , যা নিবন্ধন আইন, ১৯০৮ এর ধারা ৩৪(১) এবং (খ), (গ) তে বলা আছে ।
সংশ্লিষ্ট দলিলের তফশীলে হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে ভূমি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার অন্তর্গত লক্ষীদাড়ী মৌজাধীন বিআরএস-৫০৮ নং খতিয়ানের এসএ ১৭১৭ দাগে সূচিত বিআরএস ২১০৫ দাগের ৩১ শতক ভূমির মধ্যে ১৮ শতক অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু বিগত ১৫/১২/২০২০ খ্রি.তারিখের ৮৯১৮/২০২০ নং দলিলের মাধ্যমে উক্ত দাগের ৩১ শতক ভূমির মধ্যে ১৪ শতক ইতোমধ্যে হন্তান্তর করা হয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট দাগে মোট ভূমির তুলনায় অতিরিক্ত হন্তান্তরের বিষয়টি দৃশ্যমান হয়। সংশ্লিষ্ট দলিলের তফশীলভুক্ত ভূমি সম্পর্কিত বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ, ১ম আদালত, সাতক্ষীরায় দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ৬৯/২০১৯, তারিখ ২৩/০৮/২০২২ খ্রি.চলমান রয়েছে। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালতের আদেশ নং ৩৯, তারিখ ২২/০৩/২০২৩ খ্রি.মোতাবেক মোকসেদুর রশিদ মন্ডল ও অন্যান্য বিবাদীগণের ভারতীয় নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথি গ্রহণ করা হয় বিধায় দলিলের দাতাকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, খুলনায় সংশ্লিষ্ট দলিলের তফশীল বিষয়ক মিস আপীল নং ৯২/২০২৫, তারিখ ২৭/১০/২০২৫ খ্রি.মামলা চলমান রয়েছে।
এদিকে, বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বিগত ১৫/১২/২০২০ খ্রি.তারিখের ৮৯১৮/২০২০ নং দলিল বাতিল সংক্রান্ত কোনো আদেশ সাতক্ষীরা সদর সাব- রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে না আসায় পুনরায় একই ভূমি হন্তান্তরযোগ্য নয়। ভারতীয় ওয়েবসাইট যাচাই করে মোকসেদুর রশিদ মন্ডল, পিতা-মোমেনার হোসেন মন্ডল নামে তথ্য পাওয়া যায়। ফলে নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫১ এর ধারা ১৪ মোতাবেক তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব হারিয়েছেন। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬(১) (২) অনুযায়ী নাগরিকত্ব নির্ধারিত হয় এবং অনুচ্ছেদ ৪২(১) মোতাবেক কেবলমাত্র বাংলাদেশের নাগরিকগণেরই সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হন্তান্তর অথবা অন্যভাবে বিলি-ব্যবস্থার অধিকার সংরক্ষন করে ।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিষ্ট্রার অমায়িক বাবু বলেন, আমার কিছু বলার নেই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। আমি আমার লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছি। যেটা সত্য ঘটনা আপনারা সেটাই প্রকাশ করেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।