এম কামরুজ্জামান,শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃসাতক্ষীর'র শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড" নামীয় কাঁকড়া হ্যাচারীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন জমির মালিকগণ।
বৃহস্পতিবার ৩১ মার্চ সকাল ১০.৩০ মিনিটে সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড" নামীয় কাঁকড়া হ্যাচারীর সামনে মানববন্ধনে জমিরমালিকগণ বলেন, তাদের জমিতে কাঁকড়া হ্যাচারী করলেও চুক্তি অনুযায়ী তাদের জমির হারীর টাকা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।২০১৬ সালে সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড" নামে একটি হ্যাচারি কাঁকড়া খামার গড়ে তোলেন জাতীয় দলের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। চুক্তিতে যাওয়া জমির মালিক ও ফার্মের সঙ্গে লেনদেন করেন অন্যান্য কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা। খামারটি বন্ধ থাকায় পাওনা টাকা বা জমি কোনোটাই ফেরত পাচ্ছেন না জমির মালিকরা। ২০১৬ সালের পয়লা জানুয়ারি বুড়িগোয়ালি উপকূলীয় দাতিনাখালি এলাকায় ৪৮ বিঘা জমির ওপর কাঁকড়া প্রকল্পের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী স্থানীয় ১২ জন জমির মালিকের কাছ থেকে প্রতি বিঘা জমি ১২ হাজার টাকা হিসেবে ইজারা নেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ তার দুই ব্যবসায়িক সহযোগী সাহাগী হোসেন পাভেল ও মো. ইমদাদুল হক।জমির চুক্তিনামার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। প্রকল্পে জমি ইজারাদানকারী আবদুল মজিদের ছেলে সাইফুল ইসলাম জানান, অনেক আগেই ক্রিকেটার সাকিবসহ তিনজনের সঙ্গে জমির চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এছাড়া এর আগে সাকিব আল হাসানের নামে সাইনবোর্ড থাকলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে সাকিবের নামের কোনো অস্তিত্ব নেই। পাশাপাশি, বর্তমানে খামারটি বন্ধ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
"মেয়াদ শেষ হলেও তারা নতুন করে চুক্তি করছেন না। এমনকি জমিও ফেরত দিচ্ছেন না," অভিযোগ জমির আরেক মালিক সাইফুল ইসলামের সাকিবের প্রকল্পে ১৭ শতক জমি ইজারা দিয়েছিলেন সুরাত আলী গাজী। তিনিও টাকা পাবেন।"জমি ইজারাদার আবুল বাসার বলেন, মৌখিকভাবে আমরা ঘটনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তিনিও কোনো সু্রাহা করতে পারেননি।"ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তার ব্যবসায়িক সহযোগীদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ সকল জমির মালিকদের।
সামসুদ্দীন গাজী বলেন, "একজন স্বনামধন্য ক্রিকেটার হিসেবে আমরা সাকিবকে শ্রদ্ধা করি। তার তো টাকার অভাব থাকার কথা নয়।"আমরা সমস্যার সমাধান চাই। আমরা তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে প্রশাসনের কাছে যেতে চাই না।বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান হাজী নজরুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "কাঁকড়া হ্যাচারি থেকে সাকিব আল হাসানের নামের সাইনবোর্ডটি খুলে ফেলা হয়েছে। গত দুই বছর ধরে হ্যাচারিতে কোন কার্যক্রম নেই। জমির মালিকরা উপজেলা চেয়ারম্যান কাছে অভিযোগ করেন তিনি আমার কাছে দায়িত্ব দেন সাকিবের দুই সহযোগী ইমদাদুল হক ও সাহাগীর হোসেন পাভেল সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছেন। তারা আরও জানান, "প্রকল্পটিতে এখন সাকিব আল হাসান আদৌ আছেন কিনা তা আমরা বলতে পারছি না। সাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে চাই না কারণ তিনি দেশের সম্পদ।" খামারের শ্রমিকরা পাওনা টাকা ও জমির মালিকদের পাওনা টাকার দাবীতে বিক্ষোভ করেছিলেন। পরবর্তীতে সাকিবের নির্দেশনায় সেই টাকা দ্রুত পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত হলে অনেকে টাকা পেয়েছিলেন।প্রকল্পের সাহাগীর হোসেন পাভেল , ইমদাদুল হক ও ঘের ম্যানেজার তৌফিক জানান, "প্রকল্পটি এখন আপাততঃ বন্ধ রয়েছে, তবে আমরা ২০২১ সালের জমির মালিকদের হারির টাকা দিয়ে দিয়েছি।২০২২ সালের টাকা দেওয়া হয়নি। সেজন্য আগামী দুই মাস জমির মালিকের কাছ থেকে সময় নেওয়া হয়েছে।,পর্যায়ক্রমে তাদের ন্যায্য টাকা দেওয়া হবে এবং অচিরেই এ সমস্যার সমাধান করা হবে,আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তাছলিমা,আঃ হাকিম,সাইফুল,শহিদুল,গোলাপী,আলো বিবি, কবির প্রমূখ।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।