নিজস্ব প্রতিনিধিঃজামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালের সামনে এসে বিক্ষোভ করছেন জামায়াতের নেতা–কর্মীরা। এ সময় হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এর আগে আজ সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মারা যান একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
আরো পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন
সাঈদীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই জামায়াতের নেতা–কর্মীরা বিএসএমএমইউর ডি ব্লকের গেটের সামনে এসে জড়ো হন। রাত ১০টার সময় হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে জামায়াতের নেতা–কর্মীদের জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এ সময় তাঁরা, ‘নারায়ে তকবির আল্লাহু আকবার’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। তখন হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতালের সব গেট। হাসপাতালে আসা রোগী ও দর্শনার্থীদের নাম–পরিচয় নিশ্চিত করে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা সাঈদীর হাসপাতালে মৃত্যুমানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা সাঈদীর হাসপাতালে মৃত্যু
রাত সাড়ে ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছিলেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী ও সাঈদীর ছোট ভাই। তাঁদের সঙ্গে আছেন সাঈদীর দুই পুত্র বধূও।
আরো পড়ুন: ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আইনজীবী অ্যাড আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন আমরা সবাই শোকাহত। এ সময় আইনের ব্যাপারে কোনো কিছু বলে লাভ নেই। যেহেতু উনি মৃত্যুবরণ করেছেন আইনের ব্যাপারটা এখানে আনছি না। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সারা বিশ্ব জানে উনি এ ধরনের (মানবতাবিরোধী) কোনো কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন না।’
মরদেহ কখন হস্তান্তর করা হবে এ ব্যাপারে কিছু জানেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছুই জানি না। বিস্তারিত জানা যাবে ওনার সন্তান ও পুত্রবধূরা বাইরে এলে। তাঁরাই সবকিছু জানাবেন।’
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সঙ্গে অন্যায় হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উনি বেঁচে থাকা অবস্থায় ওনার পরিবারের কারও সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। অবহেলাজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ওনার শারীরিক অসুস্থতার কথা পরিবারের কাছে গোপন করা হয়েছে। সবকিছু পরিষ্কারভাবে জানালে তাঁকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া যেত। এই হাসপাতালে আনার আগপর্যন্ত ওনার অসুস্থতার ব্যাপারে পরিবারকে কিছুই জানানো হয়নি। এর বিচার আল্লাহ করবেন।’
এ দিকে সময় যত গড়াচ্ছে হাসপাতালে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ভিড় বাড়তে দেখা গেছে। হ্যান্ডমাইক হাতে তাঁরা নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
তবে হাসপাতালে কোনো বিশৃঙ্খলা না করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের স্পন্দন, আমাদের হৃদয়ের ডাক দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আমি সব অনুরাগী ভাইদের অনুরোধ করব শোককে শক্তিতে পরিণত করুন। ধৈর্য ধারণ করুন। কোনো রকম বিশৃঙ্খলা করা যাবে না, এটা আমাদের বৈশিষ্ট্য নয়। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ আমরা নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে গিয়ে জানাজা করব। সে পর্যন্ত আপনারা ধৈর্য ধারণ করুন। এটা হাসপাতাল, অসংখ্য রোগী রয়েছে, তাঁদের যেন কোনো সমস্যা বা কষ্ট না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।’
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।