শ্যামনগর প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়, লবণাক্ততা, নদীভাঙন ও জীবিকা সংকটে দিশেহারা মানুষদের অভিজ্ঞতা ও প্রস্তাবনা তুলে ধরতে সাতক্ষীরার ক্লাইমেট অ্যান্ড অ্যাডাপ্টেশন নলেজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হলো কমিউনিটি ভয়েজেস ফর ক্লাইমেট অ্যাকশন-এর আঞ্চলিক সংলাপ। সংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স।
সংলাপে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, নারী ও যুব সংগঠনের নেতা, বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি, আদিবাসী প্রতিনিধি, কৃষক, বনজীবী, ব্যবসায়ী, বাঘবিধবা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, আসন্ন জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (কপ৩০), যা এ বছর ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের বেলেম শহরে অনুষ্ঠিত হবে, বৈশ্বিক জলবায়ু কূটনীতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তনের সুযোগ হতে যাচ্ছে।
আলোচকরা উল্লেখ করেন, গ্লোবাল স্টকটেক (GST) বাস্তবায়ন, ক্ষতি ও ক্ষতিপূরণ তহবিল দ্রুত কার্যকর করা, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ন্যায্য রূপান্তর, বন সংরক্ষণ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ—এসব বিষয়কে কপ৩০ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে হবে।
একজন স্থানীয় নারী প্রতিনিধি বলেন, “আমরা প্রতিদিন পানি সংগ্রহ ও জীবিকা রক্ষার সংগ্রামে লড়ছি। আমাদের অভিজ্ঞতা যদি বৈশ্বিক আলোচনায় না পৌঁছায়, তবে বাস্তব সমাধান আসবে না।” অপর এক কৃষক যোগ করেন, “লবণাক্ত মাটি আমাদের ফসল নষ্ট করছে। অভিযোজন কৃষির জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা এখন সময়ের দাবি।”
অংশগ্রহণকারীরা জোর দিয়ে বলেন, জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কপ৩০-এ স্পষ্ট ও শক্তিশালী দাবি উত্থাপন করার আহ্বান জানান তারা।
সংলাপ শেষে আয়োজকরা জানান, স্থানীয় অভিজ্ঞতা ও জনগণের প্রস্তাবনা লিখিত আকারে জাতীয় পর্যায়ে পাঠানো হবে, যা বাংলাদেশের অবস্থানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও শক্তিশালী করবে। তাদের মতে, কপ৩০ শুধুই প্রতিশ্রুতির জায়গা নয়, বরং বাস্তবায়নের নতুন পথচলা শুরু করার একটি অনন্য সুযোগ।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।