নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা ও ভারতের নদীয়া সীমান্তবাসী এক হৃদয়ছোঁয়া ঘটনার সাক্ষী হলেন। শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে মৃত মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখার সুযোগ পেলেন বাংলাদেশে বসবাসরত দুই মেয়ে। বিজিবি ও বিএসএফের মানবিক উদ্যোগের ফলে এটি সম্ভব হলো।
পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার চাপড়া থানার গোংরা গ্রামের বাসিন্দা লোজিনা বেগম (৮০) বার্ধক্যজনিত কারণে গত ২ জুন রাত ৯টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তার চার ছেলে ও চার মেয়ে। দুই মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে দামুড়হুদা উপজেলার জয়পুর গ্রামে স্বামী-সন্তানসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
মঙ্গলবার (৩ জুন) মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে দুই মেয়ে চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কাছে আবেদন করেন, যেন তারা সীমান্তে দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে পারেন। বিষয়টি জানার পর ৬ বিজিবির জগন্নাথপুর বিওপি ও ভারতের ১৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গোংরা ক্যাম্প সহমর্মিতা দেখিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।
পরে সকাল ৯টা ১০ মিনিট থেকে ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ৯৬/৮-এস এর শূন্যরেখায় দুই দেশের স্বজনদের উপস্থিতিতে মরদেহ দেখার কার্যক্রম শেষ হয়।
এ সময় দুই মেয়ে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এতে দুই দেশের সীমান্তবাসী ও উপস্থিতরা বিজিবি-বিএসএফে এই মানবিক সহযোগিতায় মুগ্ধ হন।
চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, “সীমান্তে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি মানবিক বিষয়েও বিজিবি সর্বদা আন্তরিক। এ ধরনের কার্যক্রম পারস্পরিক আস্থা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরও বলেন, “সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি বিজিবি মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”
বিজিবি জানায়, সীমান্ত এলাকায় বসবাসরতদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন মানবিক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখা হবে। সীমান্তে অপরাধ রোধ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এটি এক মাইলফলক হয়ে থাকবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।