সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সুনামগঞ্জ শহরের সুরমা নদী তীরবর্তী সব এলাকার ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি ওঠেছে। শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে পানি ওঠায় দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার এবং ছাতকে ২১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় টইটুম্বুর নদীর পানি কূল উপচে লোকালয়ে ঢুকছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা ডুবে গেছে। এই উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার নবীনগর, ষোলঘর, উকিলপাড়া, জেলরোড, জগন্নাথবাড়ি, মধ্যবাজার ও পশ্চিমবাজার এলাকার বাড়িঘর ও দোকানপাটে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি। শহরের পূর্ব-পশ্চিম নতুনপাড়া, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, বাঁধনপাড়া, শান্তিবাগ, আরপিননগর, কালীপুরসহ বর্ধিত এলাকায় হাজারো মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। শহরের সবচেয়ে উঁচু এলাকা আলফাত স্কয়ারেও ছুঁইছুঁই করছে বন্যা পানি।
বুধবার থেকে দ্বিতীয় দফার বন্যার কষ্টে পড়েছে সুনামগঞ্জের মানুষ। আবারও বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এসব উপজেলা সদরে সড়কে নৌযান চলছে। পানি বাড়ায় বন্যাদুর্গত এলাকার গ্রামগুলোতে আফালের তাণ্ডবে ঘরবাড়ির ক্ষতি হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকার তথ্য জানিয়ে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, এই মাসে ৮১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হবে। এই কয়েকদিনে যে পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে, ১৯ তারিখ পর্যন্ত সেটি অব্যাহত থাকতে পারে। এক মাসের মাথায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় অনেকটা নাকাল সুনামগঞ্জের মানুষ। অবশ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব প্রস্তুতির কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসন সাহস যুগাচ্ছেন লাখো মানুষকে।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।