শাহনাজ বেগম: নিখোঁজ স্থপতি ইমতিয়াজ এর চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের মধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং অপর দুই অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে বলে জানা যায় প্রেস ব্রিফিং এ।
মঙ্গলবার (২৮মার্চ) বেলা ২ টায় মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ হত্যাকান্ড সম্পর্কিত বিস্তারিত সর্বশেষ তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল মামুন বিপিএম পিপিএম।
সোশ্যাল মিডিয়ায় Grinder Gay Chat অর্থাৎ সমকামিতা সংক্রান্ত অ্যাপসের মাধ্যমে পলাতক অভিযুক্ত আলিফের সাথে স্থপতি ইমতিয়াজের সাথে পরিচয়।
পরিচয়ের সূত্র ধরে ইমতিয়াজ আলিফের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে আরাফাতের কলাবাগানের বাসায় আসে। সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আলিফের সহযোগী আরাফাত, মুন্না, মেঘ ও আনোয়ার রুমে প্রবেশ করে এবং ইমতিয়াজকে আঘাত করে। এতে ইমতিয়াজের মৃত্যু হয়। পরে আসামীরা সুকৌশলে ঢাকা - নবাবগঞ্জ হাইওয়ে রোডের পাশে ফেলে রেখে চলে যায়।
গত ৮ মার্চ মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানার চিত্রকোটস্থ ইউনিয়নের ঢাকা -নবাবগঞ্জ সড়কের পাশে পড়ে থাকা লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দাফনের পূর্বে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুরতহাল, ময়নাতদন্ত, ফিংগারপ্রিন্টসহ বিভিন্ন আলামত সংরক্ষণ করে।
ঘটনায় সিরাজদিখান থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়।
স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির নকশার কাজ করতেন। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। গত ৭ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি নিখোঁজ হন। এ নিয়ে ৮ মার্চ তার স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
মুন্সীগঞ্জে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া হত্যা মামলায় ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সোমবার (২৭ মার্চ) বিকালে গ্রেফতার তিন আসামিকে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে সন্ধ্যায় দোষ স্বীকার করে তৃতীয় লিঙ্গের এহসান ওরফে মেঘ জবানবন্দি দেন। বাকি দুজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক রহিমা আক্তার।
গ্রেফতার হওয়া ৩ আসামি হলেন মিল্লাদ হোসেন মুন্না (১৯), আনোয়ার হোসেন (৩৮) ও এহসান ওরফে মেঘ।
বাকি দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
ওই আদালতের পুলিশ পরিদর্শক জামাল উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিখোঁজের ১০ দিন পর পরিবার জানতে পারে, ইমতিয়াজ মোহাম্মদ খুন হয়েছেন। সিরাজদিখানে যে ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার হয়েছে, তা ইমতিয়াজের। পরে আদালতের অনুমতিতে গত ২১ মার্চ মঙ্গলবার ওই লাশ উদ্ধার করে শনাক্ত করেন স্বজনেরা।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।