ডেস্ক রিপোর্টঃ বক্তব্যের শেষে হাসিনা বলতেন, ‘নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’ অথচ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর একে একে বেরিয়ে আসছে হাসিনার অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিরিস্তি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্লট জালিয়াতি থেকে শুরু করে সরকারি উপহারও ব্যাংকের গোপন ভল্টে রেখেছিলেন হাসিনা।
অগ্রণী ব্যাংকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৮৩২ ভরি স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। সেখানে সংরক্ষিত দুটি ভল্ট ভেঙে এ সম্পদের সন্ধান পায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
মঙ্গলবার রাজধানীর দিলকুশায় অবস্থিত ব্যাংকটির প্রধান শাখায় ভল্ট দুটি জব্দ করা হয়। সিআইসির এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে লকার দুটি জব্দ করেছিল সিআইসি। কিন্তু হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় আইনগত বাধা থাকায় এতদিন সেগুলো ভাঙা সম্ভব হয়নি। অবশেষে আদালতের অনুমতি নিয়ে গতকাল লকার দুটি ভাঙা হয়। এ সময় ৭৫১ এবং ৭৫৩ নম্বর ভল্টে ৮৩২ ভরি স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। বর্তমানে দুই লাখ টাকা ভরি হিসাবে উদ্ধার করা স্বর্ণের বাজারদর ১৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
অগ্রণী ব্যাংকের লকারে স্বর্ণালংকার ছাড়াও বেশকিছু উপহারসামগ্রী পাওয়া গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। রাষ্ট্রীয় তোশাখানায় এসব উপহারসামগ্রী জমা না দিয়ে ব্যক্তিগত লকারে রাখা হয়েছিল। এতে আইনের লঙ্ঘন হওয়ায় হাসিনার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হতে পারে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
এর আগে চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত সেনা কল্যাণ ভবনে পূবালী ব্যাংকের করপোরেট শাখায় শেখ হাসিনার নামে থাকা ১২৮ নম্বর লকার জব্দ করেছিল সিআইসি।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, পূবালী ব্যাংকের ওই শাখায় শেখ হাসিনার দুটি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। একটি হিসাবে ১২ লাখ টাকা এফডিআর আছে। আরেক হিসাবে ৪৪ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। এদিকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে ক্ষমতাচ্যূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১ ডিসেম্বর।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।