রামপাল (বাগরহাট) লায়লা সুলতানাঃ ১৯৭১ সালর ১৩ ডিসেম্বর সোমবারের এই দিনে রামপাল হানাদার মুক্ত হয়। এ দিন সকাল সাড়ে ৭টায় ৫৫/৬০ জন মুক্তিযোদ্ধা রামপাল মুক্ত করে লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করেন।
মুক্তিযুদ্ধর অন্যতম সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার প্রয়াত শেখ আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে বৃহত্তর (রামপাল ও মোংলা) এলাকা হানাদার মুক্ত করা হয়। রামপাল মুক্ত দিবসটি ছিল স্বজন, সহযোদ্ধাদের হারানো দীর্ঘশ্বাস ও বিজয় উল্লাসের দিন।
ডিসেম্বরের ৯ তারিখ প্রয়াত শেখ আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে বাগেরহাটের মোংলাতে আরও অপারেশনের একটি প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল। ওই সময় ৫৫/৬০ জনের একটি দল মোংলার আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন। পাকহানাদার বাহিনীর সদস্যরা একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ওই সময় গুরুতর আহত হন চিতলমারী থানার নিজামসহ ৩৪ জন মুক্তিযোদ্ধা। ওই তারিখ মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করলে পাকহানাদার বাহিনীর সদস্যরা পিছু হটে। ১২ তারিখ রাতে রামপাল থানাকে শত্রু মুক্ত ঘোষণা করতে মুক্তিযোদ্ধারা থানার অপর পার পেড়িখালী বাজারে অবস্থান নেন। ১৩ তারিখ সকালে রামপাল থানায় হাজির হলে তৎকালীন ওসি আমিনুর রহমান তাদের অভ্যর্থনা জানান। ১৩ তারিখ মুক্তিযোদ্ধারা সকাল ৭ টায় রামপাল থানায় লাল সবুজের পতাকা উড়িয়ে জয় বাংলা শ্লোগান দেন। এসময় শেখ আব্দুল জলিল, সম্মুখ সমর যোদ্ধা বড়দিয়ার টি. আহম্মদ, বাহালুলসহ সকলে উপস্থিত ছিলেন। বিজয় পতাকা উড়ানোর পর হানাদার বাহিনীর ৪৫ জন দালাল ও তার দোসরদের থানায় ধরে নিয়ে আসা হয়। তাদের থানায় কয়েকদিন আটক রেখে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ক্ষতি প্রদানের শপথ পড়িয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয় মুক্তিযুদ্ধকালীন ডেপুটি কমান্ডার অতিদ্রনাথ হালদার দুলালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ একটি চেতনা। একটি কনসেপ্ট। এটা এখনও চলমান। আমরা আমাদের অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি। সেটি শিক্ষা, মৌলিক অধিকার পূরণ ও বাঙালীর সংস্কৃতি।
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন।