,

ভোটেকেন্দ্রে থাকবে পুলিশ, টহলে সেনাবাহিনী-বিজিবি

ইসি সচিব বলেন, সব মিলিয়ে ভোটকেন্দ্রে গেলে কোনো ভয় নেই, এই নিশ্চয়তা দিতে চায় নিরাপত্তা বাহিনী। নির্বাচনে কোনো সহিংস ঘটনা ঘটবে, এটা আমরা প্রত্যাশা করি না

ডেস্ক রিপোর্টঃ আগামী ৭ জানুয়ারি হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোট। বর্তমানে প্রার্থীরা ভোটের প্রচারণায় আছেন। ভোটের প্রচারণায় বিভিন্ন আসনে সংঘাত সহিংসতা হলেও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে নানা ধরনের হামলা-গোলযোগের ঘটনা থাকলেও ভোটের দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও আশা ইসির।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) রাতে নির্বাচন ভবনে সবশেষ পরিস্থিতির অগ্রগতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কমিশনের পক্ষ থেকে এমন আশাবাদ প্রকাশ করা হয়।

বৈঠক শেষে কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, “সব মিলিয়ে ভোটকেন্দ্রে গেলে কোনো ভয় নেই, এই নিশ্চয়তা দিতে চায় নিরাপত্তা বাহিনী। প্রথম হচ্ছে এই নির্বাচনে কোনো সহিংস ঘটনা ঘটবে, এটা আমরা প্রত্যাশা করি না। যদি ঘটে তখন সমন্বিতভাবে সবাই সেটা প্রতিহত করবে।”

এ বৈঠকের তিনি বলেন, “এটা একটা ফলোআপ মিটিং ছিল। কোন বাহিনীর কতজন, কোথায় কীভাবে কাজ করছেন-সেই পরিকল্পনা তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে কমিশনকে অবহিত করেছেন।”

“প্রত্যেকেই বলেছেন, মাঠে যে পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত যে অবস্থা, তা এখন পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা নির্বাচনে বড় ধরনের কোনো আশঙ্কা করছেন না। তবে যেহেতু একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে এজন্য প্রত্যেকেই তারা তাদের নিজ নিজ গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক আরও সক্রিয় রাখবে, যাতে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটার আগেই তা নিস্ক্রিয় করা সম্ভব হয়।”

পুলিশ কেন্দ্রে, টহলে সেনাবাহিনী-বিজিবি

ইসি সচিব জানান, সাধারণ কেন্দ্রে দুইজন, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজন, অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজনের বেশি পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। সেনাবাহিনী, বিজিবি সদস্যরা নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে টহলে থাকবেন।

সচিব জানান, রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের চাহিদা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে থেকে কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী।

বিধি লঙ্ঘনে ৫৮৯ শোকজ

নির্বাচন কমিশনের আইন শাখার উপসচিব আব্দুছ সালাম জানান, বুধবার পর্যন্ত ৫৮৯ জনকে শোকজের নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮৪টির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে।

এবার ঢাকা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি, ১৩১টি শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া রংপুর অঞ্চলে ৪০টি, কুমিল্লায় ৮১টি, ফরিদপুরে ২৪টি, চট্টগ্রামে ৩৮টি, সিলেটে ২১টি, বরিশালে ২৮টি, খুলনায় ৫৯টি, রাজশাহীতে ১০৩টি ও ময়মনসিংহে ৬৪টি শোকজ করা হয়েছে।

এর মধ্যে একজনের প্রার্থিতা বাতিল, একজনকে ১ লাখ টাকা ও আরেকজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্তত আটটি মামলা ও তিনজন প্রার্থীকে ইসিতে তলব করা হয়।

এবারই প্রথমবারের মত ৩০০ আসনের প্রতিটির জন্য যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজদের নিয়ে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১,৯৭০ জন প্রার্থী শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি জানায়, সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। হাইকোর্ট থেকে ৩ জন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর দলটির মোট প্রার্থীর সংখ্যা এখন ২৬৬ জন।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রার্থী জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন। এরপর তৃণমূল বিএনপির রয়েছে ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) ৫৬ জনসহ ২৮টি রাজনৈতিক দলগুলোর মোট প্রার্থী সংখ্যা ১,৫৩৪ জন।

এর বাইরে ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। প্রার্থীদের মধ্যে ৭৫ জন হাইকোর্ট থেকে আপিলের মাধ্যমে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *