ডেস্ক রিপোর্টঃ টি-টুয়েন্টি সিরিজে পরাজয়ের লজ্জায় ডুবার পর এবার ওয়ানডের লড়াই। কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে তারুণ্যের ঝাণ্ডা ওড়ানো টাইগাররা একদিনের ফরম্যাটে অভিজ্ঞদের ওপরেই আস্থা রাখেছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পরিসংখ্যান, শক্তিমত্তা, বর্তমান অবস্থানসহ সব দিক দিয়েই এগিয়ে বাংলাদেশ দল। তবুও মাথার ওপর টি-টুয়েন্টি সিরিজ হারের চাপ। যদিও সেই চাপ থাকলেও এবার ফরম্যাটটা যে ওয়ানডে।
ক্রিকেটের প্রিয় সংস্করণে আগে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু এনে দেন সফরকারীদের দুই ওপেনার। তামিম ইকবাল আর লিটন দাসের ফিফটির পর তাদের দেখানো পথ ধরে ইনিংস গড়ে অর্ধশতক পেয়েছেন প্রায় ৩ বছর পর ওয়ানডেতে ফেরা এনামুল হক বিজয় ও বিরতি কাটিয়ে ফেরা মুশফিকুর রহিম। তাদের চারজনের ফিফটির ওপর ভর করে ৫০ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ৩০৩ রানের বিশাল সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
৩০৪ রানের লক্ষ্য টপকে জয় পেতে হলে রেকর্ড ভাঙতে হবে জিম্বাবুয়েকে। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৬১ রানের বেশি টপকে জয়ের রেকর্ড নেই তাদের। এই ৩০৩ রান অবশ্য বাংলাদেশের দলেরও রেকর্ড। হারারেতে এর আগে টাইগারদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল ৩০২ রান, যা ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছিল তামিমের দল।
এর আগে এদিনও টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে তুলনামূলক ধীরগতির শুরু এনে দেন তামিম-লিটন। যদিও ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে খোলস থেকে বের হন তারা। যেখানে প্রথম পাওয়ার-প্লের ১০ ওভারে তোলে সফরকারীরা তোলে ৫১ রান। দুই ব্যাটসম্যানের উদ্বোধনি জুটি থেকে আসে ১১৯ রান। ততক্ষণে অবশ্য তিনটি অর্জনে নিজের নাম তুলেছেন তামিম।
৭৯ বলে ওয়ানডেতে নিজের ৫৪তম ফিফটির স্বাদ পাওয়ার কিছুক্ষণ পর অফ স্পিনার সিকান্দার রাজাকে চার মেরে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ৮ হাজার রানের মালিক বনে যান এই বাঁহাতি। তার আগেই দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃত ক্রিকেটে ২৫০০০ রান পূর্ণ করেন।
কিন্তু সেই রাজার বলেই খানিক পর ফিরে যান তামিম। ইনিংসের ২৬তম ওভারে ব্যাকফুটে গিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন শর্ট থার্ডম্যান অঞ্চলে। ৮৮ বলে ৯ চারে ৬২ রান করে ফেরেন তামিম। তার বিদায়ের পর ফিফটির দেখা পান আরেক ওপেনার লিটন। মাসাকাদজাকে অন সাইডে খেলে ৭৫ বলে এই স্বাদ পান লিটন। এটি তার ক্যারিয়ারের ১৫তম ও ওয়ানডেতে সপ্তম ফিফটি।
ফিফটি পূর্ণ করে আগ্রাসী রূপে লিটন, ছুটতে থাকেন শতকের দিকে। তবে এদিন ভাগ্য যেন সঙ্গে দিল না তাকে। ৩৪তম ওভারের প্রথম বলে দ্রুত সিঙ্গেল নিতে গিয়ে পেশিতে টান পড়ে তার। এরপর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন, স্ট্রেচারে করে তাকে নেওয়া হয় ড্রেসিংরুমে। দুর্দান্ত খেলতে থাকা লিটন ৮৯ বলে ৮১ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হন। তার ইনিংসে চারের মার ছিল ৯টি ও ছয়ের মার ১টি। এদিন আর ব্যাটিংয়ে নামেননি তিনি।
লিটন অসুস্থ হয়ে সাজঘরে ফিরলে ক্রিজে আসেন মুশফিকুর রহিম। বিজয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নেন তিনি। দুইজনই পেয়েছেন অর্ধশতকের দেখা। আগে ফিফটি পূর্ণ করেন বিজয়। ফর্মহীনতায় ভুগে দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। ঘরোয়াতে দারুণ পারফরম্যান্স করে আবার জায়গা পান। ওয়ানডেতে ৩ বছর পর ফিরেই হাঁকান ফিফটি। ৪৭ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটির দেখা পান বিজয়। এই ফিফটি পান ৭ বছর ৮ মাস পর।
সুযোগ ছিল সেঞ্চুরি করার। তবে একবার জীবন পেয়েও থামেন ৭৩ রানে। উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন মুসাকান্দার হাতে। ৬ চার ও ৩ ছয়ে ৬২ বলে ৭২ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। শেষদিকে ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। তার ৪৯ বলে অপরাজিত ৫২ রানের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১২ বলে ২০ রানের সুবাদে ৫০ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ৩০২ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply