,

বৈদেশিক ঋণ ঝুঁকিসীমার নিচে, অবস্থান ধরে রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ডেস্ক রিপোর্টঃবাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ এখনও ঝুঁকিসীমার অনেক নিচে রয়েছে। এই অবস্থান ধরে রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার সকালে গণভবনে ‘অফশোর ট্যাক্স অ্যামেনেস্টি’ এবং ‘শ্রীলংকার অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সমস্টিক অর্থনীতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক উপস্থাপনা পর্যবেক্ষণ করে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অর্থ বিভাগ এই উপস্থাপনা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, এসময় শ্রীলঙ্কার চলমান সংকটের কারণ ও এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা করে দেখা যায় প্রায় সকল সূচকেই বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল অবস্থায় আছে।

গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজস্ব ও অর্থ বিভাগের তিন ঘণ্টার এই বৈঠকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ইত্যাদি অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ‘আমদানিকৃত মুদ্রাস্ফীতি’ হিসেবে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে একটি সমন্বিত রাজস্বনীতি ও মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বড় কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা নেই।

বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ও ব্যাংকিং বিভাগের সচিব অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অর্থ বিভাগের উপস্থাপনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মতো ‘দুর্বল’ অর্থনীতির দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনাকে লজ্জাজনক।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) যোগ করলে যা হয়, বাংলাদেশের জিডিপি তার সমান। ওই দুই দেশের রিজার্ভ যোগ করলে যা হয়, বাংলাদেশের রিজার্ভ তার দ্বিগুণ।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করেন, তারা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে হেয় করেন। এটা খুবই লজ্জাজনক। বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা হওয়ার কোনো কারণ নেই। অর্থনীতির সব সূচকেই আমরা খুবই ভালো অবস্থায় আছে।’

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দুই কোটি জনসংখ্যার দেশটির অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ার পর তাদের বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধই শুধু অনিশ্চয়তায় পড়েনি, নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক সংকট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *