,

শ্যামনগরে সফল নারী চন্দ্রিকা ব্যানার্জী পেল জাতীয় পল্লী উন্নয়ন পদক

এম,কামরুজ্জামান,শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা প্রত্যন্ত এলাকার সফল নারী নকশীকাঁথার পরিচালক চন্দ্রিকা ব্যানার্জী পেল জাতীয় পল্লী উন্নয়ন স্বর্ন পদক।
৩১ অক্টোবর রবিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) আগারগাঁও ঢাকায় প্রধান অতিথি হিসাবে স্বর্ণপদক সহ সম্মননাপত্র তুলে দেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি। জাতীয় পল্লী উন্নয়ন পদক ২০১৩ সালের পল্লী উন্নয়নে সফল নেতৃত্ব শ্রেণিতে নকশীকাঁথার পরিচালক চন্দ্রিকা ব্যানার্জীকে জাতীয় পল্লী উন্নয়ন স্বর্ণপদক ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড আয়োজিত অনুষ্ঠানে ২০১২ হতে ২০১৮ পর্যন্ত জাতীয় পল্লী উন্নয়ন পদক বিতরন করা হয়।
স্বাগত ভাষণ দেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক সুপ্রিয় কুমার কুন্ডু। পল্লী উন্নয়ন স্মরনিকা ‘সাফল্যের গৌরবগাঁথা’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং বিআরডিবির কার্যক্রম ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলায় নকিপুর গ্রামে চন্দ্রিকা ব্যানার্জীর জন্ম। তার পিতা মৃত অনিমেষ বন্দোপাধ্যায় ছিলেন দণি খুলনার বিশিষ্ট সেতার বাদক ও সঙ্গীত শিল্পী।চন্দ্রিকা ব্যানার্জী উপকূলীয় এলাকার সুবিধা বঞ্চিত পিছিয়ে পড়া নারীদের একত্রিত করে তৈরী করেন নারী সংগঠন নকশীকাঁথা। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কতৃক নিবন্ধিত নারী সংগঠন নকশীকাঁথার পরিচালক হিসাবে তিনি নিজস্ব কর্ম এলাকার নারীদের উন্নয়নে তথা এলাকার শিা, স্বাস্থ্য, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যক্রম, কৃষি, হস্তশিল্প প্রশিন, সুপেয় পানি নিশ্চয়তা প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি জানান ১৯৯৪ সালে সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে সকল নারীদের অধিক মাত্রায় প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহায়তায় ৬২টি পরিবারে সুপেয় পানি সংরনে বৃষ্টির পানি সংরন প্রযুক্তি, ২৩০৬টি পরিবারের জন্য ২২টি পুকুর ফিল্টার স্থাপন, ১২৭৯টি ঝরে পড়া শিশুকে উপ-আনুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে শিশু শিা প্রদান, ৫৫০টি পরিবারে বয়স্ক শিা প্রদান, ৪০০ নারী প্রধান কৃষি পরিবারে লবন সহিষ্ণু ধান বীজ বিতরন, ১০০০টি পরিবারের মধ্যে পুষ্টির চাহিদা পূরনে নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে কাব গঠন ও প্রশিণ, ১৬০টি পরিবারে প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, ৭৮০টি পরিবারে হস্তশিল্প ও কম্পিউটার প্রশিণ প্রদান করা হয়। ৯৬টি নারী প্রধান ভূমিহীন পরিবারকে খাস জমি পেতে অস্থায়ী/স্থায়ী বন্দোবস্ত সহযোগিতা সহ অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে।
চন্দ্রিকা ব্যানার্জী বলেন বাংলাদেশের শেষ প্রান্তে অবহেলিত লবণাক্ত এলকার সুবিধা বঞ্চিত নারীদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাবেন এবং আজকের জাতীয় পল্লী উন্নয়ন পদক তাদের কারণেই প্রাপ্তি বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন এই পদকটি পাওয়াতে আরও উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে এবং নারীদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তিনি স্বর্ণ পদকটি উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *