,

৬ বাংলাদেশির মৃত্যু : পাবনায় চলছে শোকের মাতম

ডেস্ক রিপোর্ট:  ২ এপ্রিল (শুক্রবার) রাতে আমেরিকায় মেয়ের বাসা থেকে পাবনায় ছেলেদের সঙ্গে সর্বশেষ কথা বলেন আলতাফুননেছা। ১ এপ্রিল আলতাফুননেছার পাবনায় ফেরার কথা ছিল। করোনার কারণে সেই ফ্লাইট বাতিল হলে তারিখ নির্ধারিত হয় ৭ এপ্রিল। কিন্তু এর একদিন আগেই ৬ জুন রাতে তিনিসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তার মেয়ে, জামাই ও তিন নাতি।

 

নিহতরা হলেন, সিটি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট তৌহিদুর রহমান ওরফে স্যাম তৌহিদ, তার স্ত্রী মিসেস মিসেস আইরিন ইসলাম নীলা তৌহিদ, তাদের তিন সন্তান তানভীর তাওহীদ, ফারবিন তাওহীদ এবং ফারহান তাওহীদ এবং আইরিন ইসলামের বৃদ্ধা মা আলতাফুননেসা।

 

পাবনার একই পরিবারের ৬ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পাবনা শহরের দোহারপাড়ায় নিহতদের স্বজনদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম চলছে।

 

এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, এটি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের কমিউনিটিতে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। সোমবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ৬ বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ঘটনাটি দেশে জানাজানি হওয়ার পরই শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েন শহরের উপকণ্ঠ দোহারপাড়া এলাকার মানুষ।

নিহতদের স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাদের গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছেন। স্বজনরা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছেন না রোমহষর্ক এ ঘটনা।

 

সরকারের কাছে নিহতদের পরিবার এবং আত্মীয়দের দাবি অন্তত নিহতদের দাফন যেন দেশের মাটিতে হয়।

একাধিক সূত্র জানায়, সোমবার সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবসের শুরুতেই মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞের খবর পান টেক্সাসের এলেন শহরের বাসিন্দারা। সেখানে সোমবার ভোরে উদ্ধার করা হয় একই পরিবারের ছয় বাংলাদেশির মরদেহ। নিহতরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের পাবনা জেলার বাসিন্দা।

 

নিহত আইরিনের ভাতিজা তাওসীফ হোসেন জানান, তারা পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন স্যাম তৌহিদের দুই ছেলে নিজেরা ঠিক করেছিল তারা সুইসাইড করবে এবং সেই সাথে পুরো পরিবারকে মেরে ফেলবে। সে অনুযায়ী তারা হত্যাযজ্ঞ সম্পন্ন করে থাকতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি সুইসাইডাল নোট রেখে গেছে ১৯ বছর বয়সী ছোট ছেলে। যেখানে সে নিজেকে মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে উল্লেখ করেছে।

 

তবে নিহতদের পারিবারের ঘনিষ্ঠজন ও প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দুই ভাইয়ের মানসিক সমস্যার কথা তারা জানতেন না। দুই ভাই ছিল খুবই প্রতিভাবান। তাদের বাবা স্যাম তৌহিদ দুই ছেলেকে নিয়ে সবসময় গর্ব করতেন।

 

এ ঘটনায় কমিউনিটিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, গেল শনিবার তাদের মৃত্যু হতে পারে। সঠিক কারণ উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

 

জানা যায়, দুই ছেলে এবং এক মেয়ে নিয়ে টেক্সাসের ডালাসের অ্যালেন হোমে বসবাস করতেন বাংলাদেশি দম্পতি তাওহীদুল ইসলাম ও আইরিন ইসলাম। আইরিন ইসলামের মা আলতাফুননেসা বাংলাদেশের পাবনা থেকে গিয়েছিলেন মেয়ের কাছে থাকার জন্য। দেশে ফেরার কথা থাকলেও করোনার কারণে আটকা পড়েছিলেন তিনি।

 

নিউইয়র্কে বসবাসকারী কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট ও পাবনার বাসিন্দা গোপাল সান্যাল বলেন, মর্মান্তিক ঘটনাটির শিকার পরিবারটির বাড়ি পাবনার দোহারপাড়ায়। তারা বিখ্যাত হায়দার (জিয়া হায়দার, রশিদ হায়দার) পরিবারের সদস্য।

 

আমেরিকায় বসবাসরত পাবনার বনগ্রাম এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা স্বাস্থ্যকর্মী নাসিমা খাতুন, প্রকৌশলী রাশিদুল হাসান মোবাইল ফোনে মঙ্গলবার রাতে জানান, আমেরিকার বাঙালি কমিউনিটিতে চলছে চরম শোক ও শঙ্কা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *