,

এক খাসি আমার লাইফ ধ্বংস করে দিয়েছে

ডেস্ক রিপোর্টঃ ঈদুল আজহা এলেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে বিশালাকারের বিভিন্ন গরু। কিন্তু এবারের ঈদে যেন সব আলো কেড়ে নিলো দেশের আলোচিত এগ্রো ফার্ম সাদিক এগ্রোর একটি ছাগল। ১৫ লাখ টাকার ছাগলটির আড়ালে পড়ে গেছে একই ফার্ম থেকে বিক্রি হওয়া কোটি টাকার বিশালদেহী গরুও। আর এর বড় একটা কৃতিত্ব মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক তরুণের। ছাগলটি ১২ লাখ টাকায় কিনেছেন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা তার এক পোস্ট থেকেই পুরো ঘটনার সূত্রপাত। পরে তার বাবার পরিচয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের নাম প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু, যা থামছে না ঈদের পরও।

এদিকে আলোচিত ইফাত বলেছেন, ‘সাদিক এগ্রো থেকে খাসি কেনেননি বরং তাকে মডেল হিসেবে দেখানো হয়েছে’। তার এ বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন সাদিক এগ্রোর কর্ণধার ইমরান হোসেন। গরু-খাসি কেনা বাবদ তাকে দেওয়া ইফাতের বায়নার ১১ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করবেন নাকি ফেরত দেবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না তিনি। কারণ, সমালোচনা শুরুর পর থেকে ইফাতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না ইমরান।

মেসেঞ্জার কথোপকথনে শেষ মুহূর্তের বিতর্কে গরু-খাসি ও বায়নার টাকা ফেরত নিতে আসবেন না বলেও সাদিক এগ্রোকে জানিয়েছেন ইফাত।

এবার কোরবানি ঈদে পশু কেনাবেচাকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে ১৫ লাখ টাকা দাম হাঁকানো ব্রিটল জাতের একটি খাসি। যা ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয় মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে ১৯ বছরের যুবকের কাছে। এরপর তার বাবার পরিচয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের নাম প্রকাশ্যে এসে সমালোচনা শুরু হলেই ভোল পাল্টে ফেলেন ইফাত। তিনি দাবি করেন, তাকে ছাগলের মডেল বানিয়েছে সাদিক এগ্রো।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ইফাতের বক্তব্যের পুরো দ্বিমত পোষণ করে খামারের কর্ণধার ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমি মার্কেটিং পলিসির অংশ হিসেবে তার নাম ব্যবহার করেছি, এটা যৌক্তিক না। হাইপ ক্রিয়েট করে লস করার মতো ব্যবসায়ী আমি না।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেটার মেসেঞ্জার দুইজনের কথোপকথন থেকে দেখা গেছে, গেল ৫ তারিখের আগে এক বার্তায় খাসির পুরো টাকার ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে ইমরানকে জানায় ইফাত। এছাড়া সামারাই নামে অন্য খামার থেকে কিনে সাদিক এগ্রোতে রাখা একটি গরুর দাম খাসির দামের সঙ্গে সমন্বয় করতে অনুরোধ করে ইফাত। ৭ জুন রাত ১টা ২৯ মিনিটে চ্যাটিংয়ে আরও পরিষ্কার হয়, খাসির দাম মিটেছে ১২ লাখ টাকা। আর সামারাই থেকে কেনা ওই গরুর দাম বাবদ ৬ বা ৭ লাখ টাকা বিয়োগ করে বাকি টাকা পরিশোধ করার কথা জানায় ইফাত। ৯ তারিখের আগের এক চ্যাটিংয়ে মোট দাম ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করে ১১ তারিখের আগে সাদিক এগ্রো থেকে খাসি ও গরু নিয়ে আসবেন বলে জানান ইফাত। ওই কথোপকথনে নিজের ব্যবসা হিসেবে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ক্রিপ্টোকারেন্সির ট্রেডিংকে দেখিয়েছেন ইফাত।

এরপর বাবার পরিচয় সামনে এসে বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে ইফাত জানিয়ে দেন, গরু-ছাগল এমনকি বায়না করতে দেওয়া ১১ লাখ টাকা; কোনো কিছুই লাগবে না তার; উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে শুধু মুক্তি চান তিনি।

ইমরান হোসেন বলেন, ‘ইফাত আর পরবর্তীতে আসেননি। আমরাও আর খাসি বিক্রি করতে পারিনি। আমরা ইফাতের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছি না। সে কি টাকা ফেরত নিবে, নাকি আমরা বাজেয়াপ্ত করে ফেলব- কিছুই বুঝতে পারছি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *