নুরুল আমিন পলাশ,কয়রা উপজেলা প্রতিনিধিঃ
গহিন সুন্দরবন থেকে অবৈধ ভাবে শিকার করা হয়েছিল হরিণ। প্রায় ৩০ কেজি মাংস লোকালয়ে এনে বস্তায় ভরা হয়েছিল। সেই বস্তা মোটরসাইকেলের দুই পাশে ঝুলিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন এক তরুণ; কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। মোটরসাইকেলটি চলার পথে সড়কে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে ধরে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় লোকজন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খুলনার কয়রা উপজেলার কালনা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে কয়রা থানা-পুলিশের একটি দল হরিণের মাংস বহনকারী ইকবাল মোড়ল (২৩) নামের ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করে। তিনি পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
কয়রা থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রাজেত আলী ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আজ সকালে কয়রার কালনা বাজার এলাকা দিয়ে হরিণের মাংসবোঝাই দুটি বস্তা নিয়ে মোটরসাইকেলে পার্শ্ববর্তী পাইকগাছা উপজেলার দিকে যাচ্ছিলেন ওই তরুণ। তবে আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় বস্তা থেকে মাংসের রক্ত বাইরে বেরিয়ে আসায় লোকজন বস্তা খুলে ভেতরে হরিণের মাংস দেখতে পান। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল জানান, কয়রার সুন্দরবন–সংলগ্ন এলাকা থেকে মনিরুল ইসলাম নামের এক হরিণ শিকারি তাঁকে এ মাংস দিয়েছেন। ৩০ কেজি হরিণের মাংস নিতে মনিরুলকে ২ হাজার ৪০০ টাকা দিয়েছেন। হরিণ শিকারি মনিরুলের সঙ্গে আগে থেকেই ইকবালের পরিচয় ছিল।
সুন্দরবন-সংলগ্ন কয়রা উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, উপজেলার একটি ছোট নদী পেরোলেই সুন্দরবনের গহিন জঙ্গল। পেশাদার হরিণ শিকারিরা গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে নাইলনের দড়ির ফাঁদ পেতে রাখেন। চলাচলের সময় হরিণ সেই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণের মাংস বিক্রি করা হয়। এক মাস ধরে এলাকায় হরিণ শিকারিদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে।
হরিণের মাংস উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি এম ইমদাদুল হক জানান, ওই মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান থাকবে।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply