নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আওয়ামী লীগের যারা মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি বা অন্য কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না তারা জামাই আদরে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মামলায় দীর্ঘ সময়ের কারাবাস ও কারামুক্তির দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনে একটি রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে দলীয় অথবা জোটের প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে মনির হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘আমার দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছি। আমি দলের প্রার্থী হয়েছি। তবে নিজের দল হোক বা জোটের হয়ে হোক নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আমি নির্বাচন করবো’।
তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেও যারা কোন অপরাধ করেননি এমন সাধারণ ব্যক্তিদের কোন ভয় নেই। তারা নির্ভয়ে চলতে পারবেন। তারা জামাই আদরে থাকবেন। তবে যারা মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা অন্যায় অপরাধ করেছেন তাদের কাউকে রেহাই দেয়া হবে না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগের সেই সব অপরাধীদের আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করে তওবা করতে হবে’।
মনির হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যতো আন্দোলন হয়েছে, তার অগ্রভাগে আমি ছিলাম। তাই চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক তারা কোন ধরনের ছাড় পাবে না।’
বিগত শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ তাদের জুলুম-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার আলেমদের টার্গেট করেছিল। মুফতি মনির হোসেন কাসেমী তাদের মধ্যে একজন। যেখানে চোর-ডাকাত-দুর্নীতিবাজ-ধর্ষকরা জেলে স্বাভাবিক জীবন কাটাতো, সেখানে আলেমদের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নির্যাতন করা হতো।’
কাসেমী দাবি করেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিকল্পনা করার কারণেই তাকে কারাগারে যেতে হয়েছিল’।
সাংবাদিকদের স্বচ্ছতার সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা সমাজের দর্পণ। আপনাদের চোখ আছে। ক্যামেরা আছে। আমি নিজেও যদি কোন অন্যায় বা অপরাধে জড়িত হই কিনা সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখবেন’।
তবে এ আই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনো ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধও জানান জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের এই নেতা।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা মাইনুদ্দিন আহমেদ, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফুল্লাহ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান, মহানগর সভাপতি মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমী প্রমুখ।
সভায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফুল্লাহ মনির হোসেন কাসেমীর মনোনয়ন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিএনপি’র সঙ্গে জোট থেকে যদি একজন আলেম মনোনয়ন পান, তাহলে তিনি হবেন মুফতি মনির হোসেন কাসেমী।’
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান বলেন, ‘আলেমদের বিরুদ্ধে কখনো চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বা দখলবাজির অভিযোগ ওঠেনি। আলেমরা যদি দেশের নেতৃত্বে আসেন, তাহলে দেশ সব অন্যায়-অত্যাচার থেকে রক্ষা পাবে এবং সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ থাকবে।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশিদ, মাওলানা মনোয়ার হোসাইন, মহানগরের নেতা মুফতি নাসির উদ্দিন মনির, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব এবং কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম তোফায়েল প্রমুখ।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply