নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব রোধ, জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারে দাবিতে বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জে জলবায়ু ধর্মঘট ও পদযাত্রা করেছেন তরুণ জলবায়ু কর্মীরা। শুক্রবার (১১ মার্চ) সকাল ১০ টায় মোড়েলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি ১২ টায় গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এ সময় রঙিন ব্যানার, পোস্টার আর নানা শ্লোগানে মুখরিত ছিল সমাবেশস্থল। “ভুয়া সমাধান নয়, নবায়নযোগ্য শক্তি চাই”এমন শ্লোগান তুলে ধরে তরুণরা বলেন, জ্বালানি নীতিতে নবায়নযোগ্য শক্তিকে অগ্রাধিকার না দিলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। তারা বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ও অর্থায়ন বন্ধ করে, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট তুলে ধরে তারা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়তে হলে জ্বালানি নীতিতে নবায়নযোগ্য উৎসগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে জীবাশ্ম জ্বালানি-নির্ভর বিদ্যুতে বিশ্বের উন্নত দেশ এবং বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের উপর গুরুত্বারোপ করে সমাবেশে জলবায়ুকর্মীরা বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশ্যই বহুজাতিক ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকেও গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারের সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) বাস্তবায়িত হলে ব্যয়বহুল ও দূষিত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার আরও বাড়বে, যা জলবায়ু লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা এই পরিকল্পনা দ্রুত সংশোধনের দাবি জানান।
ইয়ুথনেট গ্লোবাল বাগেরহাট জেলার জেলা সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল শিহাব ইমন বলেন, বাংলাদেশের টেকসই ভবিষ্যতের স্বার্থে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে কেন্দ্র করে একটি পরিবেশবান্ধব ও ন্যায্য বিদ্যুৎ মহা পরিকল্পনার গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশসমূহ যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এখন সময় এসেছে তা কথায় নয়, কার্যকর পদক্ষেপে প্রমাণ করার। বাংলাদেশ যেন জলবায়ু মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে—সেজন্য উন্নত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও আধুনিক প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে, জলবায়ু বিপর্যয়ের জন্য দায়ী না হয়েও ক্ষতির ভার বহন করা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর উপর চাপিয়ে দেওয়া সকল ধরনের জলবায়ু ঋণ অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে বাতিল করতে হবে—এটাই ন্যায্যতা ও জলবায়ু ন্যায়ের প্রকৃত চর্চা।”
এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইয়ুথনেট গ্লোবালের খুলনা বিভাগীয় সহ- সমন্বয়কারী নাসরিন আক্তার, বাগেরহাট জেলা সহ- সমন্বয়কারী রাহাতুল ইসলাম, সদস্য মেহরাব আলম অপি, নুরুন্নাহার স্বর্ণা, জোসনা আক্তার প্রমুখ।
ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বলেন, “জলবায়ু সংকটকে বিবেচনায় রেখে আমাদের শক্তি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আইইপিএমপিতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সুবিধা নিশ্চিত না করে দরকার একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ ও স্থানীয় বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটানো পরিকল্পনা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ভবিষ্যৎ জীবাশ্ম জ্বালানির মুনাফার জন্য বিক্রি করা চলবে না। নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারই একমাত্র টেকসই পথ।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply