পীযূষ বাউলিয়া পিন্টু,শ্যামনগর প্রতিনিধি।। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার হায়বাতপুর গ্রামের দিব্যদীপ মল্লিক বাপ্পার বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে।
৮ই জুন মঙ্গলবার সকাল ৭ টার দিকে দিব্যদীপ মল্লিক বাপ্পা ঢাকা থেকে ফিরে বাড়িতে গিয়ে দেখে তার ঘরের দরজার তালা কাটা, তারপর সে ঘরে ঢুকে দেখে তার ঘরের সবকিছু এলোমেলো এবং তার ঘরের ভিতরের বড় বাক্সের তালা ভাঙ্গা এবং সব এলো মেলো।
বাপ্পা তখন হতবাক হয়ে যায়, এবং বাক্সে রাখা তার মৃত মায়ের স্মৃতি হাতের, কানের, গলার স্বর্ণ অলঙ্কার খুঁজতে থাকে কিন্তু তার সবকিছু চোরে চুরি করে নিয়ে গেছে। তখন সে কাঁদতে কাঁদতে তার নিকটতম প্রতিবেশী প্রিয় কাকু সাংবাদিক আকবর কবীর কে জানায়।
তখন তিনি সাথে সাথে শ্যামনগর থানার ওসিকে বিষয়টি জানান। ওসি ঘটনা স্থলে সাথে সাথে ২/৩ জন দারোগাকে পাঠান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারে বাপ্পার মৃত মা বাবার রেখে যাওয়া সকল জিনিস বাপ্পা তার ব্যক্তিগত ১ টা ডায়েরিতে ২০২০ সালের ১ নভেম্বর লিখে রাখে এবং ডায়েরীটি পুলিশকে দেখান।
তার মৃত বাবা মায়ের রেখে যাওয়া স্বর্ণ অলংকার ও রুপার জিনিস গুলো হলো সোনার ঝুমকা ২টি, সোনা বাঁধানো শাঁখা ২টি,সোনার পাটিহার ১টি, সোনার পলা একজোড়া, সোনার কানের রিং ২টি,সোনার রুলি ২টি,সোনার নাকফুল ১টি,সোনার টিকলি ১ টি,সোনার আংটি ২ টি,সোনার চেইন ৩ টি ও রুপার চেইন ২ টি, রুপার নূপুর ২ টি, রুপার লকেট ১টি এবং ইমিটেশনের পলা ২টি, চেইন ১টি, চুড়ি ২টি, মঙ্গলসূত্র ১ টি। এছাড়াও তার ঘরে থাকা, টিভি, সোলারের ব্যাটারি, গ্যাস স্টোভ, সিলেন্ডার, রাইস কুকার ও ফ্যান সহ অন্যান্য জিনিস চোরে নিয়ে গেছে।
২০১২ সালে মা ও ২০১৯ সালে বাবাকে হারিয়ে একাকী জীবন যাপন করতো দিব্যদীপ মল্লিক বাপ্পা। বাপ্পার মা নিয়তি রানী ছিলেন ছফুরুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এবং বাবা অমলেন্দু শেখর মল্লিক ছিলেন ধুমঘাট আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
বাপ্পা ২০১৭ সালে নকিপুর সরকারী হরিচরণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ এবং ২০১৯ সালে সরকারি মহসিন কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়।
পরপর মা বাবাকে হারিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে বাপ্পা। বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র বাপ্পা এবার মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার জন্য গত কয়েকদিন খুলনায় / ঢাকাতে অবস্থান করছিল। প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র নেয়ার জন্য বাড়িতে এসে দেখল ঘরের দরজা ভাঙা। মা বাবার রেখে যাওয়া শেষ স্মৃতির সব কিছুই চুরি হয়ে গেছে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আলহাজ্ব নাজমুল হুদা ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, আমি ঘটনা শোনার সাথে সাথে এসআই দীপ্তেশ ও এসআই রিপনকে ঘটনাস্হলে পাঠিয়েছি। তিনি আরো বলেন যত দ্রুত সম্ভব চোরদের ধরে জিনিসগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
এতিম বাপ্পার বাবা মায়ের শেষ স্মৃতি যতদ্রুত ফিরিয়ে আনা যায় সেই ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন শ্যামনগর উপজেলা হিন্দু পরিষদের আহবায়ক অনাথ মন্ডল ও সদস্য সচিব উৎপল কুমার মন্ডল সহ অন্যান্য নেত্রীবৃন্দ।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply