,

হাসিনাকে বেয়াইন ডেকে ২১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পাচার করেছেন নজরুল, অনুসন্ধানে সিআইডি

অগ্রদূত ডেস্কঃ
নাসা গ্রুপ ও বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নাসা গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে শত শত কোটি টাকা দুবাই, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পৃথক অনুসন্ধান করছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপ ও বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তবে এসব ছাপিয়ে ভারত পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি বোন (বেয়াইন) ডাকতেন। পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানো তার হাস্যোজ্জ্বল ছবি। এ সুবাদে তিনি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির চেয়ারম্যান পদ পেয়ে যান। টানা প্রায় ১৫ বছর এই পদে। এই পদে যাওয়ার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদে তিনি দেশের ব্যাংক খাতের অন্যতম মাফিয়া বনে যান। আর্থিক খাতের নানা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির টাকায় দেশ-বিদেশে গড়ে তোলেন অঢেল সম্পদ। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের একাধিক দেশে রয়েছে তার বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ। তবে শেষ পর্যন্ত ‘চোরের দশ দিন গৃহস্থের একদিন’ প্রবাদের মতো তারও শেষ রক্ষা হয়নি। তিনিও ধরা পড়লেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেফতারের সংবাদ দেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

সূত্র বলছে, মজুমদার মূলত ২০১৭ সালের পর দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে নিজেকে একক ক্ষমতাধর বলে জানান দেন। এ সময় তার বড় ছেলে ওয়ালিদ ইবনে ইসলামের সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ভায়রার মেয়ের বিয়ে হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে শেখ হাসিনাকে তিনি বোন (বেয়াইন) ডাকা শুরু করেন।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে মজুমদার ব্যাপক ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন। অংশীদারি ব্যবসা হলেও ক্ষমতার দাপটে নাসা গ্রুপে তিনি একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করেন। এক পর্যায়ে কোম্পানির ২০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার ও স্পন্সর পরিচালক আলতাফ হোসেনকে বেআইনিভাবে বের করে দেওয়া হয়। পরে একাধিক সাজানো মামলার পর গোয়েন্দা সংস্থাসহ প্রশাসন লেলিয়ে দেওয়া হয় তার (আলতাফ হোসেন) বিরুদ্ধে। কিন্তু এতকিছু সত্ত্বেও দমেননি আলতাফ। মালিকানা ফেরত পেতে তিনি আইনি লড়াই শুরু করেন। পাশাপাশি মজুমদারের অর্থ পাচারের অকাট্য প্রমাণসহ নানা অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতরে চিঠি দেন।

সূত্র জানায়, লন্ডন এবং হংকং ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মজুমদারের বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে। সেখানে রিয়েল এস্টেট খাতে একাধিক কোম্পানি খুলে তিনি ব্যবসা করছেন। এছাড়া ২০১৫ সালের দিকে তিনি সৌদি আরবের কৃষি খাতে বিনিয়োগ করেন। সৌদির একাধিক খেজুর বাগানে বিনিয়োগ রয়েছে তার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতারের রাজধানী দোহায় তার সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র দৈনিক ইনকিলাব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *