,

কোম্পানীগঞ্জে খুন হওয়া বি এন পি নেতার ছেলে কে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ

মোঃ আবুল বাসার,নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।  
মামলার প্রধান আসামি ইব্রাহিম তোতার মিয়ার স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, তার বাবার হত্যা মামলা ধামাচাপা দিতে তাকে রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে আসামি করা হয়েছে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কোম্পানিগঞ্জ থানায় মামলা হয়। গত রোববার রাতে উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের দুর্গম চরে এ ঘটনা ঘটে।
এরই মধ্যে দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা হলেন, চরএলাহী ইউনিয়নের চরবালুয়া গ্রামের হানিফ চৌকিদারের ছেলে মোঃ হারুন (৪০) ও একই গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে মোঃ হাসান (৩৮)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নির্যাতনের ভূক্তভোগি নারীর (৩৫) স্বামী চট্টগ্রামে গাড়ি চালান। উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের এক দুর্গম চরে ওই নারী তার এক ডিভোর্সি মেয়েকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন।
তার এক দূর সম্পর্কের দেবর প্রায় তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। এ নিয়ে স্থানীয় রাশেদ, সাইফুল, হাসান, হারুন, রাজু ও ইব্রাহিম তাদের মা-মেয়েকে সন্দেহ করতেন।  
গত রোববার রাত ১১টার দিকে ছয় যুবক ভুক্তভোগী নারীর বাড়িতে যায়। একপর্যায়ে তারা ঘরের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা ওই নারীর দূর সম্পর্কের দেবরকে (২১) বেঁধে তাকে ও তার মেয়েকে (১৭) ঘর থেকে বাইরে নিয়ে যায়।  
ভুক্তভোগী নারী জানান, যুবকদের মধ্যে তিনজন তাকে টেনে-হিঁচড়ে বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে যান। অন্যরা তার মেয়েকে বসতঘরের পাশের রান্নাঘরের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে রাত তিনটা পর্যন্ত তারা মা-মেয়েকে ধর্ষণ করে।  

ওই যুবকেরা যাওয়ার সময় টাকা-পয়সাসহ ঘরের জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনাটি কাউকে জানালে হত্যার হুমকিও দেয়।  
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার প্রধান আসামি ইব্রাহিম তোতা অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় আমি জড়িত নই। গত কয়েকদিন আগে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমার বাবা আব্দুল মতিন তোতাকে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।  
তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে রাজ্জাক বাহিনী আমাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করে। ভুক্তভোগী নারী রাজ্জাক চেয়ারম্যানের নিকটাত্মীয়। মূলত আমার বাবার হত্যা মামলাকে ধামাচাপা দিতে ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিহিংসা মূলকভাবে আমার নাম জড়ানো হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। আমি অপরাধী হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মাথা পেতে নেব।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছয়জনকে আসামি করে মামলা নেওয়া হয়েছে। দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *