,

চোখের আলো হারালেও হার মানেননি সাইফুল — ভিক্ষা নয়, পরিশ্রমেই গড়েছেন নিজের জীবন

মোঃ হাফিজুর রহমান,নিজস্ব প্রতিবেদকঃচোখের আলো হারিয়ে ফেলেছিলেন মাত্র ১২ বছর বয়সে। কিন্তু জীবন থেকে নয়—আশা ও সাহস থেকে নয়। সেই সাইফুল ইসলাম এখন নিজের পরিশ্রমেই সমাজে উদাহরণ হয়ে উঠেছেন।

মো. সাইফুল ইসলাম, পিতা মো. আব্দুল হামিদ সরদার, বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী গ্রামে। ছোটবেলায় তিনি হেফজখানায় পড়াশোনা করতেন। সুস্থ স্বাভাবিক জীবন চলছিল। কিন্তু ১২ বছর বয়সে হঠাৎ চোখে সমস্যা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে একসময় পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান।

জীবনের এই কঠিন সময়েও সাইফুল হার মানেননি। দুই বছর আগে নিজের বাড়ির পাশে একটি ছোট দোকান খুলে শুরু করেন বিকাশ ব্যবসা ও মুদি পণ্য বিক্রি। এখন তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকানে বসে গ্রাহকদের সেবা দেন। কণ্ঠ শুনেই চিনে ফেলেন কে এসেছেন, কী লাগবে।

সাইফুল বলেন, “চোখে দেখতে পাই না, কিন্তু মন দিয়ে কাজ করি। আমি চাই না কেউ আমাকে করুণা করুক। আল্লাহ আমাকে দৃষ্টি না দিলেও সাহস আর মনোবল দিয়েছেন—সেই শক্তিতেই আজ চলছি।”

কাশিমাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, “সাইফুল আমাদের এলাকার গর্ব। অন্ধ হয়েও নিজের পরিশ্রমে যা করেছে, তা সবার জন্য শিক্ষণীয়।”

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মানবাধিকার কর্মীরা জানান, সাইফুলের এই উদ্যোগ সমাজে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিচ্ছে। তাঁরা মনে করেন, সুযোগ ও সামান্য সহযোগিতা পেলে এমন মানুষরাই সমাজে নতুন আলোর দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন।

মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের মতে, মো. সাইফুল ইসলামের মতো তরুণরা বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও প্রতিবন্ধী অধিকার বাস্তবায়নের অনুপ্রেরণার প্রতীক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *