এস কে আলীম,কপিলমুনি খুলনাঃ‘সমতট ভূমি’ অঞ্চলের কপিলমুনি একটি প্রসিদ্ধ জনপদ। পূর্বে ‘মলই’ পরগনার অন্তর্ভুক্ত এই কপিলমুনির কয়েক জায়গায় রয়েছে বড় বড় মাটির ঢিবি। জনশ্রুতি আছে এ সব মাটির ঢিবির নিচে রয়েছে প্রাচীন কালের স্থাপত্য শিল্পের অস্তিত্ব ও নানা নিদর্শন।কপিলমুনির কাশিম নগর,রাম নগর,নগর শ্রীরামপুর ও রেজাক পুরে বিরাট বিরাট মাটির ঢিবি রয়েছে। বিশেষ করে রেজাকপুর গ্রামে সিংয়ের বাগান ঢিবির বিস্তীর্ন জায়গা জুড়ে রয়েছে ইটের সমাহার। মাটি খুঁড়লেই এখানে পাওয়া যায় বর্গাকার প্রাচীন আমলের ইট। আশেপাশের লোক জন তাই মাটি খুঁড়ে ইট বের করে তাদের স্থাপনা তৈরির কাজে ব্যাবহার করছেন। এমন খবর পেয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ২০২০-২০২১ সালে পাইকগাছা উপজেলা জরিপ ও অনুসন্ধান কার্যক্রম চালায়। এতে এ সব ঢিবিগুলো শনাক্ত করা হয়। তবে সিংয়ের বাড়ি ঢিবিটিকে খননে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় তারা। সে মোতাবেক প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর (খুলনা ও বরিশাল)’র আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতার নেতৃত্বে গত ১৬ মার্চ এই ঢিবিতে খনন কাজ শুরু হয়। প্রায় ১ মাস খনন কাজের মাঝে সেখানে প্রাচীনকালের বর্গাকৃতি ইটের তৈরি ধ্বংসবশেষ একটি স্থাপনার আংশিক দৃশ্যমান হয়েছে। চারপাশে প্রায় ৭ ফুট প্রসস্থ দেওয়ালে ঘেরা এ পাকা ঘরের মাঝখানে প্রায় ৬ ফুট বর্গাকার জায়গা রয়েছে।ধারণা করা হচ্ছে বর্গাকার এই জায়গায় দেব দেবিদের বিগ্রহ ছিল। খননের সময় এখানে কঁড়ি,প্রানীর হাড় ও মাটির তৈরি তৈজসপত্রের ভাঙ্গা অংশ পাওয়া গেছে। এ খনন কাজে সংশ্লিষ্ট বাগেরহাট যাঁদু ঘরের কাস্টোডিয়ান মোহাম্মদ জায়েদ এর ধারনা এটা প্রাচীনকালে কোন ধর্মীয় স্থাপনা হতে পারে। আর স্থানীয়রা বলেছেন,রাজা লক্ষন সেন অথবা চাঁদ সওদাগরের বাস ভবন হতে পারে এটা। মোহাম্মদ জায়েদ জানান,খনন কাজের আর একমাস বাকি রয়েছে এর মধ্যে কতখানি সফলতা আসে দেখা যাক।তিনি আরও জানান,খনন কাজে বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে ২ জন ও বাগেরহাট থেকে ৪ জন দক্ষ শ্রমিক আনা হয়েছে এবং স্থানীয় ৮ জন সহ মোট ১৪ জন শ্রমিক দিয়ে প্রতিদিন খনন কাজ চলছে। এ দিকে খনন কাজ ও মাটির নিচে প্রাচীন স্থাপনা দেখার জন্য প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে এখানে।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply