,

ডিবি’র বরখাস্তকৃত এএসআই’র বাসায় ৫ হাজার ইয়াবা ও ৯ লাখ টাকা উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার

: মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে প্রায় ৭ মাস আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে বরখাস্ত হন এএসআই সালাউদ্দিন । এরপর থেকে সালাউদ্দিন পলাতক। পলাতক হলেও সে এখনো নারায়ণগঞ্জ ডিবি’র অফিসার পরিচয় দিয়ে সবখানে চলে। স্থানীয় লোকজন তাকে সালাউদ্দিন স্যার ও ডিবি স্যার হিসেবে চিনে।

ইতোমধ্যে সে মাদক ব্যবসা করে অগাধ অবৈধ সম্পদের মালিক  বনে গেছে। নিজ মালিকানাধীন ৩টা প্রাইভেটকারে রয়েছে যেগুলো ইয়াবা পরিবহন ও সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত হয়। জাসিম, ওসমান ও বাহাদুর নামের তিনজন ব্যক্তিগত ড্রাইভারও আছে।

নারায়ণগঞ্জ শহরে রয়েছে ‘জেন্টস পার্লার’ নামক বিউটি পার্লার। মাদক ব্যবসার আর্থিক হিসাব দেখাশোনার জন্য রয়েছে রয়েছে ব্যক্তিগত সহকারি। গ্রেফতারকৃত সুমন বেতনভোগী কর্মচারি হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত সালাউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারির দায়িত্ব পালন করে আসছে।

জসিম, ওসমান ও বাহাদুর প্রাইভেটকারে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন মাদক স্পটে নিয়মিত ইয়াবা পৌঁছে দেয়। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে সুমন সালাউদ্দিনের নির্দেশ মতে ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং ও এসএ পরিবহনের মাধ্যমে কক্সবাজারের ইয়াবা সরবরাহকারীদের কাছে নিয়মিত টাকা পাঠিয়ে থাকে।

র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল সোমবার (২৩ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এই বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিনের বাসায় তল্লাশী চালিয়ে ৫ হাজার ৬২০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির  ৯ লাখ ৪০০ টাকা উদ্ধার করেছে।

এ সময়  সালাউদ্দিন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তার সহযোগী সুমনকে (২৫) গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃত সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে র‌্যাব এ সব তথ্য জানতে পেরেছে। ২৪ জুলাই (মঙ্গলবার) র‌্যাব-১১ সদর দপ্তরের সিনিয়র এএসপি  মো.জসিম উদ্দীন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল সোমবার (২৩ জুলাই) জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কদমতলী এলাকায় ফ্রেন্ডস টাওয়ার ও সদর থানার নগরখানপুর এলাকায় ডিবির বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিনের দুইটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ মাদক বিক্রির টাকা উদ্ধার করে।

র‌্যাব আরো জানায়, দেশব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে র‌্যাব-১১ এর অভিযানে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা হতে বেশ কয়েকজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সালাউদ্দিন নামক একজন পাইকারি ইয়াবা বিক্রেতার নাম উঠে আসে যে নিজের প্রাইভেট কারে ইয়াবা বিক্রেতাদের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দেয়।

কয়েকদিন আগে গোপনসূত্রে  কদমতলী এলাকায় ফ্রেন্ডস টাওয়ারে সালাউদ্দিনের একটি ভাড়া বাসার সন্ধান পাওয়ার পর র‌্যাব-১১ ঐ বাসার উপর নজরদারী শুরু করে। পরবর্তীতে গতকাল  সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কদমতলীর ফ্রেন্ডস টাওয়ারের ভাড়া বাসায় সালাউদ্দিনের অবস্থান জানতে পেরে র‌্যাব-১১ অভিযান করে।

র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সালাউদ্দিন ও তার ড্রাইভার জাসিম পালিয়ে গেলেও, তার সহকারী সুমন গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারকৃত সুমনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাসার মালিক আলমাস ও কেয়ার-টেকারকে সাথে নিয়ে সালাউদ্দিনের বাসায় তল্লাশী চালিয়ে ৫ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির  ৮ লাখ ৫০ হাজার ৪০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

পরে রাত ৯টার দিকে নগরীর নগরখানপুর এলাকায় সালাউদ্দিনের অপর ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে আরো ৪০০ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির ৫০হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিন পুলিশের ডিউটির ধরণ, মাদক বিরোধী অভিযানের পদ্ধতি সহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কর্মকৌশল সম্পর্কে ধারণা থাকায় সে আইন শৃংখলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে সহজেই  মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে ।

গ্রেফতারকৃত আসামী এবং পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *