,

নানান অব্যবস্থাপনায় রামপাল-মোংলা সরকারি টেকনিকাল স্কুল এণ্ড কলেজ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ক্ষোভ প্রকাশ

লায়লা সুলতানা,রামপাল (বাগেরহাট) বাগেরহাটের রামপাল ও মোংলার দুইটি সরকারি স্কুল এণ্ড কলেজে নানান অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সোয়েব আহম্মেদ খান পরিদর্শন শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১ টায় কলেজের অসমাপ্ত ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, সারা বাংলদেশে ১০০ টি উপজেলায় গত ৯ বছর পূর্বে সরকারি টেকনিকাল স্কুল এণ্ড কলেজ নামে প্রতিষ্ঠান নির্মাণ শুরু করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ইংরেজি ২০১৭ সালে মেসার্স ঢালি কন্সট্রাকশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রামপাল ও মোংলায় কলেজ ভবনের নির্মান কাজের কার্যাদেশ পায়। তারা ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর কাজ শুরু করে। রামপাল ও মোংলার ভবন দুইটির প্রতিটির নির্মাণ ব্যায় ধরা হয় ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৬২৮ টাকা করে। ১৮ মাসে ভবন দুটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গাফিলতি করে ধীরগতিতে কাজটি করছিল। যে কারণে কাজের মেয়াদ শেষ হলে কয়েক দফায় কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। পরে ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ কাজ করে বাকি কাজ অসমপ্ত রেখে ওই প্রতিষ্ঠান পালিয়ে যায়। এতে করে নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

ইতিমধ্যে গত ২০২৪ সালে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর অধ্যক্ষসহ ৭ জন শিক্ষক এবং ৬ জন কর্মচারী নিয়োগ দেয়। পাশাপাশি বইসহ আনুষঙ্গিক মালামাল সরবরাহ করা হয়। ১৩ জন শিক্ষক ও কর্মচারীরা বসে বসে বেতন নিচ্ছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এতে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যায়ে একটি বড় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্ধেক নির্মাণ করে পালিয়ে গেছে। এতে নির্মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথা সময়ে চালু না হওয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেনি।
এ বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের ইন্সট্রাকটর কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, শিক্ষা দপ্তর থেকে নিয়োগ পাওয়ার পরে ভবন রেডি না পাওয়া এবং শিক্ষার্থী না থাকায় পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। এতে আমাদেরও খারাপ লাগছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাফিজ আক্তারের সাথে। তিনি জানান, যথা সময়ে ভবন দুটি নির্মাণ করার কথা থাকলেও মেসার্স ঢালি কন্সট্রাকশন কাজটি করেছে দীর্ঘ সাড়ে ৭ বছরেও সম্পন্ন করতে পারেনি। তারা মাত্র ৭০ শতাংশ কাজ করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হওয়ায় তাদের কার্যাদেশ ইতিমধ্যে বাতিল করে নতুন করে বাকী কাজের জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। আশা করা যায় চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে আবারো কাজ শুরু হবে।

পরিদর্শনে আসা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সোয়েব আহম্মেদ খান জানান, যতগুলো প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি, এরমধ্যে রামপাল ও মোংলার ভবন নির্মাণের বেহাল দশা দেখে হতবাক হয়ে গেছি। এখানে তো পশু বসবাসেরও উপযোগী নয়। শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা বসে বসে বেতন নিচ্ছে। যাতে করে দ্রুত ভবন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা যায় সে ব্যবস্থা নিবো। শিক্ষক কর্মচারীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেয়া হবে বলে সাংবাদিকদের জানান এই কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *