,

সুবর্ণচরে ঋন দেওয়ার নামে প্রতারণা কোটি টাকা নিয়ে ভূয়া এনজিও কর্মকর্তা লাপাত্তা

মোঃ আবুল বাসার,নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা নামক একটি ভুয়া এনজিওর পরিচয়ে একটি প্রতারক চক্র গ্রামের সহজ সরল মানুষ থেকে কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে। প্রথমে মানুষকে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে সঞ্চয় জামানত হিসেবে টাকা নেয় এবং সবাইকে একযোগে অফিস থেকে টাকা গ্রহণের জন্য আসতে বলে।
সে হিসেবে ভুক্তভোগী লোকজন বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ৩ টায় সুবর্ণচরের চরবাটা খাসেরহাট রাস্তার মাথার উত্তরে অজিফা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঈন উদ্দিন বেপারীর মালিকানাধীন নতুন একটি ভবনে ভাড়া নেয় সংস্থাটি।
সোমবার ঋণ প্রদান করার আশ্বাস দিলে ভুক্তভোগী লোকজন অফিসে এসে দেখে অফিসে তালা মারা। পূর্বে গ্রাহকের কাছে এই অফিসের সাইনবোর্ড দেখিয়ে অফিসের ঠিকানা দেখালেও গ্রাহকেরা এসে দেখে এখানে ঋণ প্রদানের কোনো কার্যক্রম নেই।
এতে লোকজনের মনে সন্দেহ সৃষ্টি হলে সংস্থার প্রধানের ফোন নাম্বারে কল করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর তারা নিশ্চিত হতে পেরেছে যে তারা বড় ধরনের একটি প্রতারণার শিকার হয়েছে।
খবর পেয়ে আরো ভুক্তভোগীরা সেখানে জড়ো হলে পুলিশকে খবর দেয়া হলে তাৎক্ষণিক পুলিশ আসে। উপস্থিত লোকজন পুলিশের কাছে ভুয়া অফিসের কাছে বাড়ি ভাড়া দেওয়া বাড়ি ওয়ালা কেও দায়ী করে অভিযোগ জানায়। তাতে বাড়িওয়ালা মাইনুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন, আমার নতুন বিল্ডিংয়ে অফিস হিসেবে ভাড়া নেওয়ার জন্য গতকাল কয়েকজন লোক এসেছে এবং আজকেই তাদের সাথে বাড়িভাড়া চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। তারা যে ভুয়া এবং প্রতারক এই বিষয়টা আমার জানা ছিল না।’
চর জুবলি ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বললে নুরবানু নামক এক ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমাকে ১০ লক্ষ টাকা দিবে বলে আমার কাছ থেকে ৫৫ হাজার টাকা নিয়েছে। হাসিনা আক্তার নামে আরেক ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমাকে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা দিবে বলে আমার থেকে ৪২ হাজার টাকা নিয়েছে। আলেয়া আক্তার নামে একজন ভুক্তভোগী বলেন, আজ সকাল ১০ টায় আমাদের কাছ থেকে গ্রুপভিত্তিক করে টাকা নিয়েছে আজকেই লোন দিয়ে দিবে বলায় আমিও ৪২ হাজার টাকা দিয়েছি। মোঃ খলিল নামক এক ব্যক্তি বলেন, গতকালকে আমাদেরকে লোন দিবে বলে জানিয়ে টাকা প্রস্তুত রাখতে বলে। আজ সকালে আমি ঠিকানা অনুযায়ী সাইনবোর্ড ঝুলানো অফিসে এসে দেখি অফিসে ৭-৮ জন লোক আছে এবং আজকে অনুষ্ঠান করে টাকার চেক হস্তান্তর করবে। অনুষ্ঠানের জন্য বাইরে প্যান্ডেলেরও ব্যবস্থা করছে এবং সবাইকে আপ্যায়নের দাওয়াতও দেয়া হয়েছিল। এসব দেখে আমি নিজেও ১১ হাজার টাকা জমা দিই। আক্তার বলেন এভাবে শতাধিক ভুক্তভোগীর দাবি অনুযায়ী প্রায় এক কোটি টাকার মত হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র।
এ ব্যাপারে চর জব্বার থানার ওসি মোঃ শাহীন মিয়া বলেন, এই ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। প্রতারক চক্রটি ধরার জন্য পুলিশ কাজ করছে। এছাড়াও তিনি প্রতারণা থেকে বাঁচতে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে জনগণকে সতর্ক থাকতে বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *