,

আশাশুনিতে চিংড়ী মাছে অপদ্রব্য পুশ যেন অপ্রতিরোধ্য

আহসান উল্লাহ বাবলু,সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ঃ আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন মৎস্য সেটে ও হাটবাজারের ডিপোগুলোতে অবাধে চলছে চিংড়ির দেহে অপদ্রব্য পুশ। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকটি স্থানে অভিযানে জরিমানা আদায় করা হলেও যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এ কর্মকান্ড। চিংড়ির ওজন বাড়াতে ব্যবসায়ীরা এ কাজে লিপ্ত রয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। পুশ করা এসব গলদা-বাগদা প্রকাশ্যে কোম্পানীতে বিক্রি হচ্ছে। তবে পুশ রোধে মাছ কোম্পানীসহ ডিপোগুলিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান আরো জোরদার করার জন্য সাধারণ ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়েছেন। জানাগেছে, আশাশুনিতে ছোটবড় হাটবাজারে ও ঘের সংলগ্ন এলাকায় ঘের থেকে চিংড়ী ক্রয়ের প্রতিষ্ঠান মৎস্য সেট ও ডিপো রয়েছে। আর এ সকল প্রতিষ্ঠান ও মাছের ডিপোয় ভেজালমুক্ত বাগদা ও গলদা চিংড়ি কিনে প্রসেসিং করে মাছ কোম্পানীতে সরবরাহ করে। প্রোসেসিং এর মধ্যে অন্যতম কাজ হচ্ছে ওজন বাড়াতে চিংড়ির দেহে অপদ্রব্য পুশ করা। এ কাজ করার জন্য প্রতিটি ডিপোর রয়েছে গোপন কক্ষ। আর কর্মরত রয়েছে এক শ্রেনীর শ্রমিক। এদের সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়। এরা ডাক্তার নামে পরিচিত। কথিত এই ডাক্তারদের পুশ করা বাবদ কেজি প্রতি বাগদা হার্ডপুশ ৫০ টাকা, মধ্যম ২৫ টাকা ও হালকা ৩০ টাকা এবং গলদা হার্ডপুশ একশ’ টাকা, মধ্যম ৬০ টাকা ও হালকা ৩০ থেকে ২৫ টাকা দিতে হয়। আর এ কাজ গুলো মুলত মহিষকুড়, মাড়িয়ালা, ঘোলা, হাড়ীভাঙ্গা-নাটানা,পুঁইজালা, শিতলপুর শ্রীউলা, কাদাকাটি, গুনাকরকাটি,তেতুলিয়া, বুধহাটা, মহেশ্বরকাটি,পাইথালী,চাপড়া, বসুখালি, কামালকাটি, বদরতলা, সরাপপুর, গাবতলা, মহিষাডাঙ্গা, টেংরাখালি, তেঁতুলিয়া, তালবাড়িয়া, যদুয়ারডাঙ্গা, কালাবাগি, হাড়িভাঙ্গা, তুয়ারডাঙ্গা,খাজরা, কাপসন্ডা, কাকবাসিয়া, মনিপুর,আনুলিয়া প্রতাপনগরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত মৎস্য সেট ও ডিপো গুলোতে চলছে এ পুশ কার্যক্রম। এক শ্রেনির ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরা, খুলনার বাজার থেকে ক্রয় করে এনে জেলি পাউডার ,এ্যরোরোট,সাবু জালানো পানিতে জ্বালিয়ে ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে তা চিংড়ির দেহে প্রবেশ করান। পুশ করা বাগদা ও গলদা খুলনা ও যশোরে হিমায়িত চিংড়ি ফ্যাক্টরীতে সরবরাহ করছে ব্যবসায়ীরা। ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ পুশ করা চিংড়ি খরিদ করা হয়না বলে প্রচার করলেও মূলত পুশ ছাড়া কোন চিংড়ি তারা রিসিভ করেন না বলে একাধিক সূত্র জানায়। ফ্যাক্টরীতে এসব চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী হার্ডপুশ করে বাগদা ও গলদা চিংড়িতে পুশ করা বাবদ স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় অসাধু কিছু ব্যক্তি ও সাংবাদিক নামধারী কিছু ব্যক্তি মৎস্য সেট ও ডিপো মালিকদের কাছ থেকে মাসোয়ারা আদায় করে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এ পুশ এর ব্যাপারে অগ্রনী ভূমিকা রাখতে পারেন উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে তারা নিরব ভূমিকা পালন করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী অপদ্রব পুশ করার কথা স্বীকার করে বলেন, পুশ করার মূল হোতা কোম্পানী মালিকরা। তারা পুশ করা চিংড়ি খরিদে সতর্ক হলে বা এ চিংড়ি ক্রয় না করার জন্য কঠোর অবস্থান নিলে কোন ব্যবসায়ী চিংড়িতে পুশ করতো না। তিনি বলেন পুশ বিরোধী অভিযানে কোম্পানী মালিকরা থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে। আর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সাধারণ ব্যবসায়ীরা। সুধী মহল মনে করেন স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট জোরদার ও পাশাপাশি ফ্যাক্টারির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে ফিরে আসতে পারে চিংড়ীর অতীত দিন।এব্যপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসারের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদক বলেন আমরা তিন জায়গায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করেছি এবং চেষ্টা চলছে আরো বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসাইন খান জানান আমরা অলরেডি আমি মৎস্য অফিসার ও সহকারি কমিশনার ভুমিকে নির্দেশ দিয়েছি ব্যবস্থা নিতে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *