,

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে সম্মাননা পেল ১০ মন্ত্রণালয়

২০১৯-২০ অর্থবছরে (২০২০-২১) বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়নে সেরা ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে।

রোববার (১৮ জুলাই) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সম্মাননা দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এপিএ বাস্তবায়নে সেরা ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে রয়েছে- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

একই সঙ্গে শুদ্ধাচার পুরস্কারও দেয়া হয়েছে। সিনিয়র সচিবদের মধ্য থেকে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার, ২০২০-২১ পেয়েছেন।

এছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রথম স্থান অর্জনকারী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকারী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সম্মাননা দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি এবং গতিশীলতা আনতে সরকার কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি চালু করে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে সিনিয়র সচিবদের মধ্যে প্রতি বছর এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে থাকে।

এই চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগের কৌশলগত উদ্দেশ, গৃহীত কার্যক্রম ও লক্ষ্যমাত্রা এবং এ সকল কার্যক্রমের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিমাপের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক রয়েছে। মন্ত্রণালয়, বিভাগের বার্ষিক ও মধ্যমেয়াদী বাজেট কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এপিএ’র আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে সব মন্ত্রণালয়,বিভাগ এপিএ স্বাক্ষর করছে। পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মন্ত্রণালয়, বিভাগের সঙ্গে অধীন দফতর-সংস্থার এপিএ স্বাক্ষর শুরু হয়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিভাগীয়, আঞ্চলিক এবং জেলা পর্যায়ের অফিস এপিএ’র আওতায় আনা হয়। সব শেষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উপজেলা পর্যায়ের অফিসে এপিএ সম্প্রসারিত হয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আরও জানায়, বর্তমানে এপিএ প্রণয়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের কাজটি এপিএএমএস নামক একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে শেষ করা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার ইউনিট এপিএ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগসহ সকল পর্যায়ের সরকারি অফিসকে সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে।

চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) একটি সমন্বিত কাঠামোর আওতায় এপিএ প্রণয়ন করা হয়েছে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এপিএ’র নতুন কাঠামোতে সরকারি অফিসের নিজস্ব কাজের পাশাপাশি সুশাসন ও সংস্কারমূলক পাঁচটি কর্মপরিকল্পনা (সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি, শুদ্ধাচার, ই-গভর্নেন্স ও উদ্ভাবন, তথ্য অধিকার এবং অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে সুশাসন সংক্রান্ত কার্যক্রমের বাস্তবায়ন জোরদার হবে এবং সরকারি অফিসের কার্যক্রমের সমন্বিত মূল্যায়নের পথ সুগম হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

২০২১-২২ অর্থবছরের এপিএতে কার্যক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের রূপকল্প-২০৪১, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০, ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ সহ নির্বাচনী ইশতেহারের লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে। এবারের এপিএতে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগের বিশেষ জনহিতকর কার্যক্রমও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও এপিএতে করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়টিও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

এপিএ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সিনিয়র সচিব এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *